RSS Feed
Posted by স্বাভিমান

মানব মস্তিষ্ক, সমাজ ও সমাজবাদ

অরূপ বৈশ্য

মস্তিষ্কের কোষ বা নিউরনের প্রোটিন আবরণ ভেদ করে তৈরি হয় আয়ন চ্যানেল। দ্রুত খোলে সোডিয়াম চ্যানেল। নিউরনের বাইরে সোডিয়াম পজিটিভ চার্জ আয়নের পরিমাণ ভেতরের চেয়ে বেশি। ফলে পটেনশিয়্যাল ডিফারেন্সের গ্র্যাডিয়েন্ট মেনে সোডিয়াম আয়ন বাইরে থেকে ভেতরে প্রবেশ করে ও নিউরন ভল্টেজ বেড়ে যায়। পটাশিয়াম চ্যানেল যেহেতু ধীরে ধীরে খোলে, ফলে সোডিয়াম চ্যানেলের পর সেই চ্যানেল খোলে। পটাশিয়াম আয়ন আবার বাইরে থেকে ভেতরে বেশি, ফলে তা ভেতর থেকে বাইরের দিকে যায় ও ভল্টেজ কমতে থাকে।

এই আয়ন চ্যানেল ভল্টেজ সংবেদনশীল। ভল্টেজ গ্র্যাডিয়েন্টের ফলে আয়ন চ্যানেলের মাধ্যমে ভল্টেজ পরিবর্তন করে যা পজিটিভ ফিডব্যাক প্রসেস হিসাবে স্পাইক বা অ্যাকশন পটেনসিয়েলের জন্ম দেয় যা বৈদ্যুতিন সিগনাল হিসাবে নিউরেন ভেতরে বাহিত বা স্টোর হয় বা নিউরন মেমব্রেনের বাইরে ট্রান্সমিট হয়। নিউরনের ভেতর থেকে বাইরে ও বাইরে থেকে ভেতরে আয়নের এই চলাচল স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলতে থাকে।

কিন্তু নিউরনের ভেতরে ও বাইরে ভল্টেজ গ্র্যাডিয়েন্ট অর্থাৎ সোডিয়াম ও পটাসিয়াম আয়নের ঘনত্বের ব্যবধান প্রাথমিক পর্যায়ে কীভাবে তৈরি হয়?

তার জন্য দায়ি আরেকধরনের মলিকিউল যাকে বলা হয় সোডিয়াম পাম্প। সোডিয়াম পাম্প সোডিয়াম আয়নকে নিউরনের ভেতর থেকে বাইরে ও পটাসিয়াম আয়নকে বাইরে থেকে ভেতরে নিয়ে আসে। সেই চলাচল যেহেতু ভল্টেজ গ্র্যাডিয়েন্টের মাধ্যমে আয়ন চলাচলের বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়, সেজ
ন্য তাকে শক্তি বা এনার্জি ব্যবহার করতে হয়। অবিচ্ছিন্নভাবে ব্যবহৃত সেই এনার্জির পরিমাণ যে কোন মুহূর্তে ১৫ ওয়াট। সেই এনার্জির উৎস কী?

কোষের আবরণের মাইটোকোন্ড্রিয়ায় গ্লুকোজের সাথে রক্ত প্রবাহিত অক্সিজেনের অক্সিডাইজিং মেটাবলিজমের মাধ্যমে গ্লুকোজ থেকে এটিপি পরমাণু বা মলিকিউল
(Adenosine triphosphate) তৈরি হয়। সেটা হচ্ছে শক্তি বা এনার্জির উৎস যা সোডিয়াম পাম্পের সাথে বণ্ড তৈরি করে এটিপি ভেঙে আয়ন প্রবাহের চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করে।

এবার আয়ন মুভমেন্টের মাধ্যমে যে স্পাইক
বা অ্যাকশন পটেনশিল যে ইলেকট্রিক্যাল সিগনাল বা পাল্স প্রবাহের সূত্রপাত ঘটায়, তা প্রবাহিত হয় আ্যাকজন নামে এক তারের মত কনডাক্টরের মধ্য দিয়ে, এবং অ্যাকজনের মধ্য দিয়ে যাতে প্রবাহ ভাল হয় তারজন্য মায়েলিন আবরণের ইনস্যুলেটর দিয়ে অ্যাকজন মোড়া থাকে। কিন্তু শুধুমাত্র ইলেক্ট্রিক সিগনাল হিসাবে প্রবাহিত হয় মূলত মেরুদণ্ডহীন প্রাণীতে, মানব মস্তিষ্কে নিউরন কোষ পেরিয়ে অ্যাকজন কনডাক্টারে আসার সাথে সাথে তা ক্যামিকেল সিগনালে রূপান্তরিত হয়। ইলেক্ট্রিক স্পাইক একধরনের রাসায়নিক পদার্থের নিঃস্বরণ ঘটায় (গ্লুটোমেট, গাবা, গ্লাইসিন) যাকে বলা হয় নিউরোট্রান্সমিটার। সিগনালের মাধ্যমে অ্যাকজনের মধ্য দিয়ে তথ্য প্রবাহিত হয়ে অন্য নিউরনের ড্যান্ডরাইটের রিসেপ্টরের তালা খোলে দেয় নিউরোট্রান্সমিটার এবং পুনরায় আয়ন চ্যানেলের মাধ্যমে আয়ন প্রবাহিত হয়ে ইলেকট্রিক সিগনালে রূপান্তিরিত হয়।

দুর্বল সিগনাল ইনহিবিটর বা প্রবাহ নিরোধক হয়, আর হাজার হাজার নিউরন থেকে আগত তথ্যের সেই সিগনাল এক্সাইটর বা উত্তেজক হিসাবে কাজ করে। এভাবে একটি নিউরন অন্যটির সাথে কথা বলে, দূরবর্তী প্রবাহের জন্য এধরনের কন্ডাক্টর হাইওয়ে দিয়ে প্রবাহিত হয়
, মস্তিষ্কের একদিক থেকে অন্যদিকে এবং মেরুদণ্ডের মাধ্যমে পেশী পর্যন্ত প্রবাহের জন্য সুপার-হাইওয়ের বাণ্ডিল বা করপাস কলোজাম দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এভাবেই তথ্য প্রবাহের জন্য সম্পূর্ণ মস্তিষ্ক ব্যবহৃত হয়। অ্যাকজন কন্ডাক্টর বা তারের প
রিবাহিতা ০.২ মিটার প্রতি সেকেণ্ড থেকে ১০০ মিটার প্রতি সেকেণ্ড। আয়ন চ্যানেল ও অ্যাকজন দিয়ে প্রবাহকে বলা হয় সিনাপটিক ট্রান্সমিশন। ইইজি'র মাধ্যমে ইলেকট্রিক কারেন্ট প্রবাহের গোলযোগ ধরা পড়ে কারণ আয়ন প্রবাহে ভারসাম্যহীনতায় বেশি বা কম এনার্জির প্রয়োজন পড়ে, অনুরূপভাবে এফমআরআই ও একধরনের ব্রেইন-ম্যাপিং। বেশি বা কম এনার্জি মানে বেশি বা কম অক্সিজেনের ব্যবহার, বেশি বা কম অক্সিজেনের ব্যবহার মানে বেশি বা কম রক্ত প্রবাহ, সেটাই সেই ম্যাপিং-এ প্রতিফলিত হয়। রাসায়নিক সিগন্যালের ভারসাম্যহীনতা প্রতিফলিত হয় আচরণে, যার জন্য রাসায়নিক অষুধ ব্যবহার করতে হয়। মস্তিষ্কের গ্রে-ম্যাটারে সব ধরনের পদার্থ থাকে, হোয়াইট ম্যাটারে থাকে শুধু অ্যাকজন ও মায়েলিন। মস্তিষ্কের সঞ্চালন মূলত রাসায়নিক হওয়ায় মস্তিষ্কের সঞ্চালনে কোন ধরনের ত্রুটি শরীরের অন্যান্য যন্ত্রে রাসায়নিক পদার্থের অনাকাঙ্খিত উপস্থিতি ঘটিয়ে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সেজন্যই মানুষ বেঁচে থাকে ও জীবন উপভোগ করে তার মস্তিষ্কে।

আমাদের দেহের চারপাশ থেকে অসংখ্য ও বহুবিধ অনুভূতিগুলির মস্তিষ্কে সঞ্চালন একই প্রক্রিয়ায় ঘটে। আমাদের দেহে অসংখ্য রিসেপ্টর সেল রয়েছে যেখানে বাইরের অনুভূতিগুলি গৃহীত হয়ে ইলেকট্রিক সিগন্যাল বা বহুবিধ
রাসায়নিক সিগনাল হিসাবে উপরে বর্ণিত প্রক্রিয়ায় স্পাইক বা অ্যাকশন পটেনসিয়্যাল তৈরি হয় যার থেকে সিনেপটিক ট্রান্সমিশন প্রক্রিয়ায় মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে এবং মস্তিষ্ক তা ডিকোড বা সংকেতগুলির অর্থোদ্ধার করে।

সচেতনতা ও উপলব্ধি এই প্রক্রি
য়ায় কীভাবে ক্রিয়াশীল থাকে বা কগনিটিভ বায়াস কীভাবে প্রভাব বিস্তার করে সেই ভিন্ন প্রসঙ্গে প্রবেশ না করে মস্তিষ্কের এই স্বাভাবিক ক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্য রেখে সমাজের প্রসঙ্গ অতি-সংক্ষেপে বিচার করে দেখা যাক।

উপরের বর্ণণা থেকে এটা পরিষ্কার যে, মনুষ্য দেহের চারপাশের অবস্থা বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে সেটা হলো শুধু বেঁচে থাকা, পারিপার্শ্বিক মিলে যে মনুষ্য মস্তিষ্ক, সেটাই জীবন।

সমাজ থেকে বহুবিধ তথ্য অনুভূতির সিগনাল হিসাবে মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। সেগুলির রকমফের নির্ভর করে সমাজ কীভাবে গঠিত তা দিয়ে। অর্থাৎ উৎপাদন সম্পর্ক ও উৎপাদিকা শক্তির আন্ত:ক্রিয়ায়। অসংখ্য মানবদেহ বা জীবন্ত মস্তিষ্ক মিলেই সমাজ। সমাজের অবস্থা দেহের বাইরের জগতের সিগনালগুলির স্বরূপ নির্ধারণ করে,
আবার সেই সংকেতগুলি ডিকোড করে মানব মস্তিষ্ক কী অর্থ করল তা নির্ভর করে, জ্ঞানীয় পক্ষপাত বা কগনিটিভ বায়াসের উপর। জীব জগতের অন্য প্রাণীকে বাদ দিলে, বাস্তব মানব সমাজে মানুষ ছাড়া বাকী সবকিছুই জড় বা মৃত। সে অর্থে সমাজ মানে মস্তিষ্কের সমাহার, যার প্রতিটি একক পরস্পরের থেকে আলাদা।

সমাজের কোন একটা আলোড়নের সিগনাল-স্তর মস্তিষ্কে যে স্পাইক ও উত্তেজনার সৃষ্টি করে তা সমাজের একাংশের মধ্যে একইধরনের সমষ্ঠিগত আবেগ ও ক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে, কিন্তু সেই উত্তেজনার আবেগ ও ক্রিয়ার রূপান্তরের পর পুনরায় পরস্পর আলাদা আলাদা এককে পরিণত হবে। মানব সমাজে আলোড়নের এমন কোন সিগনাল স্তর সৃষ্টি হওয়া কী সম্ভব যা মানব সমাজের বিপুল গরিষ্ঠাংশের মধ্যে একইধরনের আবেগ ও ক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে? পুঁজিবাদী সমাজের ব্যাখ্যা করে মার্কস দেখিয়েছেন যে, সেরকম আবেগ ও ক্রিয়ার জন্ম দেওয়া সম্ভব যার মধ্যে সমাজের যে বিপুল গরিষ্ঠ অংশ সামিল হয়ে যায়, সেই অংশটিকে তিনি অভিহিত করেছেন ‘শ্রমিকশ্রেণি’ হিসাবে। কিন্তু সেই আবেগ ও ক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর, প্রতিজন শ্রমিকের মস্তিষ্ক আবার আলাদা আলাদা একক, সেখানে নিহিত সমাজবাদী গঠন প্রক্রিয়ার রহস্য যা এখনো উন্মোচিত হয়নি। বরঞ্চ পুঁজিবাদী বাজার-সভ্যতা সেই রহস্য সমাধানে আরও জটিলতার সৃষ্টি করছে।

বাজারের পণ্যসামগ্রী নিয়ে যে বিজ্ঞাপন হয় কিংবা অনলাইন বিক্রি প্রক্রিয়ায় ক্রেতাকে সামিল করা হয়, সেই বিজ্ঞাপন ও বিক্রি পদ্ধতি দেখে বা স্পর্শে ক্রেতার মস্তিষ্কে কী ধরনের অনুভূতি হয় তা নিউরোসায়েন্সের মাধ্যমে বিক্রেতা বা পুঁজি মালিক আগাম জেনে নিতে পারে এবং সে অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন ও বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারে। ইইজি ও এফএমআরই’র রিপোর্ট স্টাডি করে বাজারে পণ্য সম্পর্কে ক্রেতার প্রতিক্রিয়া উৎপাদক আগাম জেনে নিতে পারে। ১৫ বছর আগে ৯/১১’র ট্যুইন-টাওয়ার আক্রমণের ফলে জনমনে ভয়ের প্রতিক্রিয়া নিয়ে মস্তিষ্কের এফএমআরআই’র মাধ্যমে এরকম এক স্টাডি আমেরিকাতে হয়েছিল। সেই স্টাডি দেখিয়েছে যে, ৯/১১’র আক্রমণের ঘটনা যে মস্তিস্কে ভয়ের অনুভূতি ট্রিগার করেছিল, তাতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট ভোটারদের মস্তিষ্কে ভিন্ন ভিন্ন ক্রিয়ার জন্ম দিয়েছিল। নিউরোমার্কেটিং বিশেষজ্ঞদের মতে, এফএসিএসের (ফ্যাসিয়েল অ্যাকশন কোডিং সিস্টেম) মাধ্যমে ভারতের মত দেশে যেখানে ভোটারদের মধ্যে মতাদর্শগত মেরুকরণ ঘটেছে, সেখানে এফএমআরআই’র তূলনায় কম ব্যয়ে ভোটারদের মন আগাম ও সুনির্দিষ্টভাবে পড়ে নেওয়া সম্ভব। মস্তিষ্কে নিউরোলিঙ্ক (এন১ ইমপ্লান্ট) বসানো’র বিষয়টি এলেন মাস্ক প্রবর্তন করার পর, পুঁজিপতিরা নিউরোসায়েন্সকে কতটুকু বাণিজ্যিক কারণে ব্যবহার করতে পারে ও মানব মস্তিষ্ককে বাইরে থেকে প্রভাবিত করতে পারে এনিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।  


বিপ্লবী বামপন্থার অন্যতম পথিক কমঃ অনির্বাণ বিশ্বাস স্মরণে

Posted by সুশান্ত কর Labels: , ,

এপ্রিল ২০২১ ভো­রবেলা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন পিসিসি সিপিআই (এম-এল)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড অনির্বাণ বিশ্বাস। নকশালবাড়ির বিপ্লবী ধারার রাজনীতিতে তিনি ছিলেন উন্নত তত্ত্বের প্রবক্তা এবং সুলেখক। নকশালবাড়ি আন্দোলনের শুরু থেকেই বিপ্লবী চর্চা ও অনুশীলনের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।

প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময়, ১৯৬৮ সাল থেকেই পার্টির কাজকর্মের সাথে যুক্ত হন কমরেড অনির্বাণ। ১৯৭১ সালে গ্রেপ্তার হয়ে বছরখানেক জেলবন্দি ছিলেন। ছাড়া পাওয়ার পর আবারও নকশালবাড়ি ধারার বিপ্লবী কাজকর্ম চালিয়ে যান। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রাপ্ত হন। ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার সময়ে আবারও গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। ১৯৭৭ সালে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর কিছুদিন পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও বন্দিমুক্তি আন্দোলনের সাথেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। পারিবারিক প্রয়োজনে ১৯৮১ সালে হেতমপুরের কৃষ্ণচন্দ্র কলেজে অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং সমান্তরালভাবে পার্টির কাজকর্মের সাথেও যুক্ত থাকেন।

তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীরা বলেন, তিনি প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ছিলেন, অনেকেই তাঁকে নলেজ ব্যাঙ্কবলেও ডাকতেন। বোলপুরের পুরোনো সাথী কমরেড মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ তাঁর সম্পর্কে বলেনআমার দেখা সেরা সৎ সর্বহারা মতাদর্শের প্রতি নিষ্ঠাবান মানুষ। জ্ঞানের স্পর্শে মনে হত চলমান বিশ্বকোষ শিশুর মতো সরল। প্রাত্যহিক দিনযাপন ছিল চরম অযত্নের। অনির্বাণদা যখন কথা বলতো, সে চলমান সমাজ বাস্তবতা হোক, কবিতা, খেলা (ক্রিকেট বা ফুটবল), দর্শন, অর্থনীতি সবেতেই চূড়ান্ত পাণ্ডিত্যের ঝলক। সেই কমরেড অনির্বাণ বিশ্বাস এর অভাব ভোলার নয়।


একাধিক পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন তিনি। সমর সেন সম্পাদক থাকাকালীন ১৯৬৮ সাল থেকেই তিনি ফ্রন্টিয়ার উইকলিপত্রিকার সাথে যুক্ত হন ও পরবর্তীতে লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৮৭-তে সমর সেন মারা যাওয়ার পর ফ্রন্টিয়ারের সম্পাদকের দায়িত্ব নেন তিমির বসু। তিমির বাবুর সাথে ২০১২ সাল থেকে সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন কমরেড অনির্বাণ। ১৯৮০ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে পিসিসি সিপিআই(এম-এল)-এর ইংরেজি মুখপত্র ফর অ্যা নিউ ডেমোক্রেসি’-র সম্পাদনার কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন । ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলনের কর্মী কমরেড নির্মল ব্রহ্মচারী জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নরওয়েতে চলে যান। তিনি কলকাতা, লন্ডন, ওসলো ও ঢাকার লেখকদের নিয়ে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পত্রিকা বের করে চলেছেন নামপূর্বাশা এখন। দ্বিভাষিক পত্রিকাটির ইংরেজি বিভাগের সম্পাদক ছিলেন কমরেড অনির্বাণ। পত্রিকাটির সর্বশেষ সংখ্যায় কমরেড অনির্বাণ বিশ্বাস সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে পিসিসি সিপিআই (এম-এল) -এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির বিবৃতি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেন।


২০০৬ সালে প্রকাশিত তাঁর বই ‘The Cowrie Currency and Monetary History of India’ প্রকাশিত হয় ক্যাম্পপ্রকাশনা সংস্থা থেকে। তাঁর অন্যতম চর্চিত বই ‘Money and Markets from Pre-colonial to Colonial India’ প্রকাশিত হয় ২০০৭ সালে দিল্লির আকার বুক্‌সথেকে।

জন্ম ১৯৫২ সালের ২০ জুলাই চট্টগ্রামের শাকপুরায়। বাবা প্রয়াত হৃদয় রঞ্জন বিশ্বাস ছিলেন বীরভূমের হেতমপুরের কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের অর্থনীতির অধ্যাপক ও মা প্রয়াতা নমিতা বিশ্বাস। পাঁচ ভাই ও একবোনের মধ্যে তিনি চার নম্বর। বড়ভাই প্রয়াত সুদেব বিশ্বাস ছিলেন শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের স্নাতক এবং সিপিআই (এম-এল) পার্টির শুরুর সময়ের এক নিষ্ঠাবান কর্মী। কমরেড অনির্বাণের স্ত্রী ঝর্ণা বিশ্বাস বর্তমানে হেতমপুরের বাসিন্দা, মেয়ে মৌসুমি বিশ্বাস বিশ্বভারতীতে পদার্থবিদ্যায় গবেষণারত। জামাতা অমিতাভ সৎপথী পেশায় স্কুলশিক্ষক।


সহজ সরল জীবন ধারায় বিশ্বাসী কমরেড অনির্বাণ ছিলেন বিপ্লবী রাজনীতির এক বিশ্বস্ত যোদ্ধা। মৃত্যুর আগে পর্যন্তও তিনি তাঁর বিভিন্ন লেখায় ভারতে সংঘ-বিজেপির ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলে গেছেন ও সক্রিয়ভাবে তা প্রচার করে গেছেন। বাংলা তথা ভারতের বামপন্থী সমাজবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ ও বিপ্লবী রাজনীতিতে বিশ্বাসীদের খুব কাছের সহযোদ্ধা ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোক ব্যক্ত করেছেন বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সিপিআই (এম-এল) নিউ ডেমোক্রেসি, সিপিআই (এম-এল) রেড স্টার, সিপিআই (এম-এল) কানু সান্যাল গ্রুপ এর মতো বিপ্লবী বামপন্থী দল এবং বন্দিমুক্তি কমিটি সহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা ও ট্রেড ইউনিয়নের তরফ থেকেও শোক প্রকাশ ও বিদায়ী অভিবাদন জানানো হয়েছে।নয়া গণতন্ত্রব্লগে নিয়মিত লিখবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি এবং কিছু লেখা প্রকাশিতও হয়েছিল ইদানিংকালে।

বিপ্লবী আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করা ও এক উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াই হবে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর উৎকৃষ্ট পন্থা। কমরেড অনির্বাণ বিশ্বাস সমাজ-বদলের হাজারো সংগ্রামীদের স্মৃতিতে ও রাজনীতিতে চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন।

ইনকিলাব জিন্দাবাদ।
কমরেড অনির্বাণ বিশ্বাস লাল সেলাম।

 

On communist unity and united front in India

Posted by স্বাভিমান

 

Frontier articles on Society & Politics

Whither Communist Movement?

Of Unity and United Front

Arup Baisya

The question of the Unity of Communists and the United Front needs to be dealt with within the framework of the subject–object,structure–superstructure relationship. The manifesto for revolution needs to be evolved based on a theoretical premise for communist unity and the united front. Dwelling on this theoretical premise, it opens a broad understanding of the urgent need of building the subjective force incommensurate with the objective reality. This rests on a general perception of the Marxist philosophy of praxis. But it has also its own specificities. In the Indian context, the left legacy has its bearing on the complexities of left unity in the here and now.

The Indian Communist Party, when first formed in Tashkent in the year 1920, carried with it the legacy of the idea of 'socialism from above' of the Second International. Though Lenin always considered Rosa Luxemburg with high esteem as a left revolutionary, Lenin criticised Luxemburg in the Seventh Congress of Second International for her underestimation of the role of the party. Though Leninist strategy was presumed to be correct in the history of the communist revolution, Rosa's contention became clear in 1906 when she wrote an outstandingly original booklet, 'The Mass Strike, the Political Party, and the Trade Unions'. She brought the Marxist idea of "the emancipation of the working class is conquered by the working class themselves" into the centrestage by advocating 'socialism from below'. It underlines the importance of 'social movement' as specific achievements by self-organising social forces.

The social movement is one of the key collective forms in which the class struggle is conducted. But the self-organising social movement has diverse tendencies in consonance with the class interest of contending classes which have their organic linkages with the social movement in specific space-time and strive to give a direction of the movement to serve their own class interest and as such all social movements are not revolutionary in character. Here comes the question of 'social movement from above' where the conscious vanguards belonging to the communist party can consciously evaluate the objective condition under which the self-organising social movement can be revolutionary and formulate the ways and means to connect with the movement from below to act as catalysts for a radical transformation of the movement. Though Gramsci's diagnosis that no movement can be purely spontaneous is true, the conscious leaderships which he termed as organic intellectuals are mostly influenced by the tradition of the specific space-time and remotely influenced by the capitalist world system in General. But the self-organising social movement releases the classes from the clutches of the tradition to make a distance with the tradition for enabling them to identify themselves as part and parcel of the class in general to challenge the entire system for a revolutionary change. This psychological uplift-ment can transform into a material force of the class-unity only through the process of the unity of myriads form of revolutionary social movements against diverse manifestations of the exploitative system.

The vanguard character of the communist party only becomes meaningful in the sense of becoming a subjective force for both the revolutionary seizure of power and radical social change when this unity becomes the prime mover of praxis. Where the lever is to be applied for the revolutionary seizure of power is decided by the development of such unity from within the movement itself and by the emancipation of the working class conquered by themselves. If this becomes the understanding of the development of the social revolution, the solid and temporally fixated conception of arrogating all knowledge of revolutionary change as scientific knowledge by the communist party and the vanguards and the idea of the infallibility of the Central committee melt into the air. Here, Rosa Luxemburg was again correct when she asserted that the process of learning of the masses from the defeat of their struggle is more precious than the victory of the vanguards. This idea of the dialogical development of the revolutionary moment can remove the barrier of the egoistic mindset and authoritarian outlook of the Party as the supreme authority of the revolution and pave the way for the unity of the revolutionaries.

The influence of the Comintern on Indian Communists had further accentuated the process of developing a sectarian outlook. Sobhanlal Dutta Gupta in his book 'Comintern and the destiny of Communism in India 1919-1943: Dialectic of Real and Possible History (Kolkata: Seriban, 2006)' writes that in the aftermath of the Sixth Congress in 1928, the Indian communists were expressly directed by the Comintern to disband the Workers and Peasants Parties (a number of such parties were acting as the vehicle of the communist movement at that time) and to leave the nationalist mass organisations. But when the Comintern shifted to a united/popular front strategy in 1935 in the face of the fascist threat, it did not admit that the line of the Sixth Congress was a mistake. A similar thing happened when consideration of the Second World War as an imperialist war at the initial phase was abruptly changed to people's war for Germany's attack on Soviet Russia. Indian Communists under the leadership of CPI was just formulating the tactics under the strategic direction of the Comintern. When the centre of the Indian communists shifted to India especially after the dissolution of the Soviet Union, the same conceptualisation of Marxism as scientific knowledge arrogated and internalised by the vanguards of the party centre prevailed. The fundamental tenet of Marxism as a 'philosophy of praxis' and a process was thus undermined. This legacy is continued and has its bearing on Indian practicing communists. This is a big impediment in evolving the unity of the communist revolutionaries because each party claims that it has perfected the theory and set it for the communist revolution in India.

Caste, Class and Communist Unity
This understanding has also misrepresented the conception of class. The class is considered solely as a static structural question. The conception of class without class struggle is a misnomer because, in the real world, there are classes as 'being' which is only in the process of 'becoming' through struggle. There are diverse categories of individuals or groups of individuals sans class struggle, even if they are workers in the capitalist system. This static mindset of conceptualisation of the class obscured the caste question in India from the Indian communists to ignore it from the beginning -- whenever they considered it under the compelling reality of caste struggle, they treated it as a mere tactical question. The worker–capital, the lower caste–upper caste etc. are interpenetrating in the super-structure to sustain the structure of the division of labour. Both the category of worker and caste become class in the process of struggle for the revolutionary change of the system of interpenetrating capitalism and casteism under the hegemony of capital. The static formulaic version of the class is also another stumbling block in achieving the unity of the communist revolutionaries as the real struggle in the here and now remains out of sight and focus. If the revolution and the conception of 'the working class emancipation conquered by themselves' become the prime concern, the unity of the communist revolutionaries can easily be achieved despite some differences in the theoretical polemics of strategic question which can be debated and evolved within the garb of the vibrant struggle of the classes.

The unity of different revolutionary communists and parties does not mean a monolithic formation without any inherent struggle within it. If this is conceived as the basis of unity where all differences are resolved, then this unity will transform into a dead mass without any vibrant energy necessary for living contact with the people's or class struggle. But the question remains what will be the mechanism to encourage debate to resolve differences? The mechanical formulations of constitutional norms and code of conduct for resolving the differences cannot be ruled out, otherwise, the possibility of the emergence of a debating club instead of practicing a revolutionary party cannot be avoided. But this must be subject to the continuous scrutiny of objective necessity and cannot be considered as a fundamental premise. The transitional moment determined by the intensity of class conflict necessitates the division of strategic position on the class-line for completion of a task historically bestowed on the shoulder of the revolutionary party. In this moment of societal transition too, the unified party may allow praxis based on diverse strategic positions and this is possible if the Indian communists shed their legacy of not conceding mistakes in front of the struggling masses who can learn even from the mistakes of the vanguard communists revolutionaries.

The third but most important impediment in achieving the unity of the communist revolutionaries is the nature of uneven development which is ingrained in capitalism and it is much pronounced in a country like India which is an ex-colonial country of British imperialist. The diverse revolutionary formations are engaged in revolutionary praxis in diverse parts of India, some parts are more developed than the others, and as such the class struggle in which revolutionary parties are engaged experiences diverse forms of struggle. This creates a variety of understanding of the reality internalised from the praxis. As the party centre is organically linked with its rank and file, the understanding of the party centre also gets influenced by the experiences of the praxis which is continuously summed up and the primary political task is thus continuously evolved. This is a structural barrier against the unity of the revolutionary parties. But this barrier is getting somehow mitigated by the overwhelming pressure from the combined development of capitalism and the forces of homogenisation from above for the fascist takeover of centralised power. That the proletarian ideology of the communist revolutionaries settles the question once and for all is over-simplistic.

United Front
The question of the united front can be viewed from the Gramscian notion of 'War of Position' and 'War of Maneuver'. From Gramsci's study, this author is not sure whether Gramsci considered these two categories segregated for capitalist West and backward Eastern countries. But considering capitalism as a system which carries all previous pre-capitalist systems within its hegemonic control and inherently imperialistic from its birth and when, at this juncture, capitalism reached to its zenith of global expansion, both 'War of Position' and 'War of Maneuver' are intrinsically imperative for the communist parties to undertake for the development of the revolutionary social movement of diverse categories for the emancipation of the working class. But the practising revolutionaries based on their wisdom of assessment of the concrete situation must be capable of determining the moment of time when one prevails over the other and dominates the direction of the movement. The rise of fascists forces and the danger of fascist takeover of power underline such moment of history when "War of Position" i.e. the building of the united front even with a section of ruling class bourgeois parties becomes the determining factor for the development of the class struggle for revolutionary systemic change. It does not mean that the "War of Maneuver" is completely abandoned, it just becomes contingent on the united front struggle. Again, by Gramsci's account, fascism is a passive revolution and it means, the rise of fascism manifests the objective revolutionary situation for active revolution under the leadership of the working class. The weakening of fascist forces through the United Front struggle will open the space for the revolutionary forces to occupy and transform the "War of Maneuver" as a dominant form for the revolutionary seizure of power. There are revolutionary forces who consider the fascist danger in India as real but denies the necessity of a united front. Such perception is evolved from the sectarian view of considering the party as the dominant player for revolution, not the working class and their emancipation. They do not realise that the fascist forces gather strength in the absence of the emancipation of the working class and that sets the agenda for the revolutionary parties as the facilitators to create space for the working class to emancipate themselves through the united front movement.

What will be the nature of this united front? The Foundation of the united front must be the unity of the social movements. It is not the unity brought about only by social engineering or by co-ordination amongst the leaders. It is to be developed through the movements of the parts going ahead with a realization to change the whole, the systemic whole. The unity is not improvised, but the organisers are animated by the unity with total devotion to the construction of a new society as a whole far ahead of the need and interest of the parts. In this phase of capitalism, the zeitgeist is defined by the diverse social movements that have surfaced in the world stage, be it 'Black Life Matters' of America or the "Gilets Jaunes" movement of France or the "Citizenship" movement in India or for that matter, the "Save Climate or Save Nature" movement, "Anti-eviction or Rehabilitation" movement, 'Women's liberty movement' etc. All these movements have revolutionary potential to unite for the emancipation of the working class to radically change the system. The independent peasant and labour movements are also raising its face once again. The unity of revolutionary forces will accelerate the process of unity of those struggles.

But the anti-fascist united front must also include the bourgeois forces and parties who are willing to fight the fascist forces to safeguard the constitutional democracy and to gain electoral space for power. This is important because revolution does not only mean seizure of power but also means social revolution which necessitates the fulfilling of the task of extending democracy by eradicating the deficits in a constitutional democracy. As such, safeguarding the constitutional democracy becomes the primary task when the danger of fascist takeover of power becomes a reality. This also means accentuating the struggle for radical democracy and building of socialism within the garb of anti-fascist united front struggle and this task cannot be postponed as a post-revolutionary task. So, the anti-fascist movement has the primacy of safeguarding constitutional democracy through a broad-based united front movement. There will be on-going criticism of the parliamentary parties, but it won't be opprobrium from above so long as these forces maintain some distance from the fascist and uphold people's issues, the harsh criticism will be at play within class struggle and class conflict, in the vibrant life of which the working class can understand from their life experience where their class and people's interest lie.

All movements, be it revolutionary or anti-fascist, do not become a real movement so long as these do not become the festival of the oppressed. The united front gives the oppressed masses a sense of empowerment to defeat the fascist forces. This sense of empowerment is the only way for the psychological build-up of the working class to transcend their desire for higher plank for their own revolutionary emancipation. The class-struggle within which the revisionism and parliamentary cretinism need to be combated must have the agenda of restructuring the power and society until the moment comes when the revolutionary seizure of power becomes an inevitable task. What this agenda should minimally include?

The united front movement will open the space to consolidate the revolutionary forces to build overwhelming mass support-bases in various pockets. It is true that without a revolutionary Government at the centre, there will not be enough available resources for the building of a new economy in various areas. A revolutionary Government in power can only stop the diversion of resources from unproductive expenditure and primarily from huge defence spending by dismantling the standing army and arming the people for national security and striking a peace deal with neighbouring countries even if it is tantamount to sacrificing some disputed land claimed only for pandering national pride. The world history tells us that any imperialistic aggression can be successfully combated by the people's militia resurrected with a zeal to safeguard the nation for building a new society and a new country that belongs to them when mighty defence forces of the bourgeois ruling class states even fail to safeguard. The people's power can also be activated to safeguard the public property and public services with their pride to suffer but not to compromise with their sense of freedom in the event of any imperialist sanction and conspiratorial counter-revolution. But even when the united front struggle gathers sufficient strength to compel the bourgeois fascist forces in power to take a backseat, some new economy-building measures can be undertaken by the revolutionary forces within the garb of vibrant people's struggle.

A village or cluster of villages or urban areas can be mobilised for cooperative economic activities. The great reversal of China to capitalism was started by returning to family responsibility in agricultural production and party bureaucratic ownership in industrial production that dismantled the commune and collective ownership of means of production. There was a big leap in socialism-building as well as growth during the initial phase of post-revolutionary China. Pre-revolutionary China was most backward and as such building of socialism was not possible to germinate prior to the revolutionary seizure of power. But the social balance of forces is different in present-day India which is much more advanced than the then pre-revolutionary China. It is mechanistic to shelve the idea of even taking any baby-step for the building of socialism until the bourgeois class is not dislodged from power.

Charles Bettelheim writes "In the initial phase of post-revolutionary China, the commune coincides with the basic administrative unit, viz, the canton or the townships. For the time being, the administration of the commune is run by the popular council of the township. The communes can federate and constitute a single federation in each district or council. It is also within the framework of the commune that people who can carry arms are armed and organized into popular militias." Initially the mode of distribution was according to a "wage system", then moved to the passage to distribution "according to need". (Source: China's Economic Growth: Charles Bettelheim, Monthly Review, Volume 10, Number 11, March 1959). What can be done in India within the united front struggle in a pre-revolutionary period?

At the least, 'Peasants' Association' in agricultural production and 'workers' council' in the industrial work and service-place can be formed for upgrading the democratic decision-making process, and land reform and cooperative ownership of means of production can be promoted in the areas where revolutionary forces are formidable in strength and workers-peasants' class gathers sufficient power and the supreme form of electoral democracy with right to recall can be practiced. This process is, of course, sustainable if the people's movement is raised to a higher plank where working-class emancipation is on the verge of being conquered by themselves. The anti-fascist United Front struggle must also be pressurised from below to undertake the agenda of nationalization of production and service units and providing universal ration and free universal service in health, education, etc. with people's participation for popular control over the services so that only use-value is created replacing the capitalist exchange-value. The communist revolutionary forces within the united front struggle must ensure that these minimum people's power is achieved whenever the liberal bourgeoisie occupy the citadel of state power for an interim period replacing the fascist forces, and the revolutionary seizure of power is still to be achieved.

Frontier
Vol. 53, No. 22-25, Nov 29 - Dec 26, 2020

স্বাভিমান:SWABHIMAN Headline Animator

^ Back to Top-উপরে ফিরে আসুন