কার্যকরী লোকপাল আইন, গনতন্ত্রকে প্রসারিত করা, পঞ্চায়েতিরাজ ও গ্রামসভা প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার দাবিতে অনশন কর্মসূচী সফল করুন
Posted by Labels: appeal, Assam, peoples activismলোকপাল বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকায় আমরা শঙ্কিত। আমরা শঙ্কিত এই কারণেই যে এক নখদন্তহীন, দুর্বল এবং দুর্নীতিবাজদের শায়েস্তা করতে অপারগ এক বিল পার্লামেন্টে পেশ করার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দুর্নীতিরোধে সরকার ও সরকার-পরিচালক দল কংগ্রেসের অনীহা ও অনাগ্রহ প্রকাশ পেয়েছে। যেহেতু পার্লামেন্টে বিতর্ক ও গৃহিত হওয়ার মধ্য দিয়েই এই বিল আইনে রূপান্তরিত হবে, তাই “টিম আন্নার” তৈরি খসরা বিল সংসদে পেশ করতে কোন আপত্তি থাকার কথা ছিল না। এক্ষেত্রে সরকারের আপত্তি তাদের দূরভিসন্ধিরই পরিচায়ক। তৃণমূল স্তরে ও সর্বোচ্চ স্তরের দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে উভয় স্তরের কর্তাব্যক্তিদের লোকপালের আওতায় আনা আবশ্যক। প্রধানমন্ত্রী ও জিলাস্তর সহ নিচুতলার প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের লোকপালের আওতার বাইরে রেখে সরকার প্রকারান্তরে দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার পরিবর্তে প্রশয় দেওয়ারই এক আইন তৈরি করতে চাইছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হলে অভিযোগকারীর উপর শাস্তির বিধান রেখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করার ব্যাপারে মানুষকে নিরুৎসাহিত করতে চাইছে সরকার। আমরা সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করছি।
বন্ধুগণ, আমরা মনে করি, সর্বস্তরে দুর্নীতিকে রোধ করতে হলে, এক কার্যকরী লোকপাল প্রতিষ্ঠান গঠন করা এবং তার অধীনে রাজ্যিক লোকায়ূক্তকে শক্তিশালী করার সাথে সাথে বর্তমান সংসদীয় গণতন্ত্রকে আরও প্রসারিত করা প্রয়োজন যাতে নীতি-নির্ধারক আইনসভা ও রূপায়ণকারী প্রশাসন-যন্ত্রকে জনগণ কার্যকরীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি জনগণের ক্ষমতা বৃদ্ধি না করে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। অথচ, আমরা লক্ষ্য করছি যে, আশির দশক থেকে এবং বিশেষ করে ১৯৯১ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর গৃহিত নয়া আর্থিক নীতির মাধ্যমে সমস্ত কিছুকে বেসরকারীকরণ তথা ব্যক্তিগতকরণের ফলে জনগণের অপ্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণও উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেশি-বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানীগুলি তাদের ব্যক্তিগত মুনাফার স্বার্থে ও সস্তায় দেশের শ্রম-সম্পদ লুঠ করার উদ্দেশ্যে টাকার থলি নিয়ে মন্ত্রী-আমলাদের দোয়ারে হাজির হচ্ছে এবং তাতে অতীতের তূলনায় দুর্নীতি ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং লাগামছাড়া কালো-টাকার পাহাড় গড়ে উঠছে। জনগণকে ঘুমে রেখে এবং জনগণের কাছে উত্তর দেওয়ার ব্যাপারে প্রাতিষ্ঠানিক বাধ্যবাধকতা ক্রমাগত শিথিল করে, ব্যক্তিগতকরণের মাধ্যমে জনগণের প্রতি সরকারের দায় কমিয়ে আনার মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি ও আমলারা অর্থ ও বাহুবলে বলিয়ান হয়ে উঠছেন।
বন্ধুগণ, গণ-আন্দোলনের চাপে তৃণমূল স্তরে যেটুকু ক্ষমতা জনগণ আদায় করতে পেরেছে, সেই গণ-প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রশাসনিক কূটচালের মাধ্যমে অকার্যকরী করে দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েত ও এনরেগা আইনে যে গ্রামসভার বিধান রয়েছে সেগুলিকে বাস্তবে অনুষ্ঠিত না করে নথিপত্র কারসাজি করে গ্রামসভাকে প্রহসনে পরিণত করার অপচেষ্টা নিরন্তর চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েতের হাতে নির্ধারিত ক্ষমতাগুলি হস্তান্তর না করে গ্রামীণ মানুষের ক্ষমতায়নের এই প্রতিষ্ঠানকে মন্ত্রী-আমলাদের লুঠের এজেন্ট-প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা হচ্ছে।
তাই, বন্ধুগণ, এক কার্যকরী লোকপাল বিধেয়ক, গন-ক্ষমতায়নের জন্য গনতন্ত্রকে প্রসারিত করা, পঞ্চায়েতিরাজ ও গ্রামসভা প্রতিষ্ঠানকে কার্যকরী ও শক্তিশালী করার দাবিতে ইন্ডিয়া অ্যাগেনস্ট করাপশনের সর্বভারতীয় কর্মসূচীর অঙ্গ হিসেবে আমরা শিলচরেও ১৬ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন কর্মসূচীতে সামিল হচ্ছি।
সংগ্রামী অভিনন্দন সহ :
ইন্ডিয়া অ্যাগেনস্ট করাপশন – অ্যা লঙ মার্চ, বরাক ভ্যালির পক্ষে নির্মল কুমার দাস ও নেহারুল আহমেদ মজুমদার কর্তৃক প্রচারিত ও ....................................মুদ্রিত।
সঙ্গে আছেনঃ অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন,বরাক হিউমেন রাইটস ইউনিয়ন, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি সহ প্রায় বিশটি আরো সংগঠন।