বরাক উপত্যকার প্রেক্ষিতে আধিপত্যের নতুন বয়ান ও বৌদ্ধিক দীনতা

Posted by স্বাভিমান

বরাক উপত্যকার প্রেক্ষিতে আধিপত্যের নতুন বয়ান ও বৌদ্ধিক দীনতা
অরূপ বৈশ্য

২৭ জুলাই, ২০১৪,
দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ 
আত্মবিস্মৃত বাঙালি
বরাক উপত্যাকার প্রেক্ষিতে লিখতে বসলে বাঙালি প্রশ্নকে গুরুত্ত্ব আরোপ করতেই হয়, কারণ এই উপত্যকায় পরিচিতির দিক থেকে বাঙালিরাই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু এই বাঙালির চালচিত্র গোটা বাঙালি জাতির গৌরবগাঁথার পাঁচালি দিয়ে শুরু করা যায় না। অনেকেই বলেন এবং যথার্থভাবেই বলেন যে আজকের বাঙালির বৌদ্ধিক কাঙালপনা নিহিত রয়েছে এই বয়ানে যে আজকের বাঙালি এক আত্মবিস্মৃত জাতি। বৃহত্তর বাঙালি জাতির একটি ধারা সবসময়ই নিহিত ছিল সমগ্র মানবসমাজ নিয়ে চিন্তা-চর্চার মধ্যে যাকে বাম বা মানবিক আন্তর্জাতিকতাবাদী ধারা হিসেবে নিঃসন্দেহে অভিহিত করা যায়। যেহেতু সমগ্রের চিন্তার মধ্যেই জ্ঞানের আসল রসদ লুকিয়ে থাকে, তাই এই ধারার আধিক্যের সময়েই বাঙালি জাতি প্রকৃতি বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান ও সাহিত্য-সংস্কৃতির জগতে জন্ম দিয়েছে তার রত্নগর্ভাদের। সেই সময়গুলোর এক কালপঞ্জী তৈরি করে তার সামাজিক-ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের এক সুসমজ্ঞস্য ব্যাখ্যা করার প্রচেষ্টা করা যেতেই পারে। কিন্তু বর্তমান নিবন্ধ এক ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা। তথাপি প্রারম্ভে কিছু প্রাসঙ্গিক জটিল কথা বলে নেওয়া জরুরি।

সংকীর্ণ স্বার্থের প্রাধান্য
বর্তমান সময় এক সংকটকালীন সময়। প্রতিটি সংকটকালীন সময়ের সামগ্রিকতার অভ্যন্তরে আর্থিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বৌদ্ধিক ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ক্রমান্বয়ে পরিস্ফুট হতে থাকে। স্থান-কালের বিচারে যারা মানবসমাজের নির্ধারক ও নিয়ন্ত্রক শক্তি এই সংকট আসলে তাদেরকেই উদ্বেলিত করে তুলে, কারণ তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে উঠে এই ভেবে যে নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিতরা মাথা তুলে দাঁড়িয়ে যেতে পারে। এই প্রক্রিয়া অনুধাবন করার প্রচেষ্টা খানিকটা জটিল বৌদ্ধিক চর্চা। কিন্তু এই চর্চাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার প্রবণতাই আসলে বৌদ্ধিক সংকটের লক্ষণ। বাঙালি বৌদ্ধিক সমাজ, বিশেষ করে বরাক উপত্যকার মত পিছিয়ে পড়া এক অঞ্চলের স্থাণু বৌদ্ধিক চর্চা যে এই সংকটের গণ্ডি অতিক্রম করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক, সেব্যাপারে দ্বিমত থাকার কোন কারণ নেই। একটা সময় ছিল যখন কে কীভাবে কোন বিষয়কে দেখছে অর্থাৎ দর্শনের প্রশ্নটি এক গুরুত্ত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় ছিল। এখন বিশেষ করে আশির দশক থেকে, কার্যসিদ্ধিই আসল মন্ত্র হয়ে উঠেছে, সবকিছুই এখন ম্যানেজারিয়্যাল স্কিল। বেড়াল সাদা বা লাল যাই হউক, ইদুঁর মারলেই হলো। এই দক্ষতারই এক উজ্জ্বল প্রতিভূ হিসেবে হাজির করা হয়েছে আমাদের মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কিন্তু স্থূল চালচিত্র আমাদের ভবিষ্যত সমাজকে এক উজ্জ্বল ভিতের উপর দাঁড় করাতে পারে না। অথচ আত্মবিস্মৃত বাঙালি জাতি ইদুঁর ধরার এই সংকীর্ণ ছাঁটেই পা দিয়েছে বলে মনে হয়। ক্ষুদ্র স্বার্থের উর্ধে উঠে বাঙালির বৃহত্ত্বের বৌদ্ধিক চিন্তার বিস্তৃত হৃদয় বৃত্তি কখনোই প্রাধাণ্যকারী ভূমিকায় ছিল না। নাহলে বাঙালি জাতির বিভাজন বিরোধী ধারা কখনই পরাভূত হত না। ১৯০৫-এর বঙ্গভঙ্গ, ১৯১১-এর কলকাতা থেকে দিল্লিতে রাজধানী স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে বঙ্গভঙ্গ রদ, ১৯৪৮-এর পুনরায় বঙ্গভঙ্গ এই সবকিছুতেই বাঙালি ভদ্রলোকদের সংকীর্ণ স্বার্থ চিন্তাই আসলে জয়লাভ করেছে। শেখর বন্দোপাধ্যায় ও জয়া চাটার্যির মত গবেষকরা বাংলার ও বাঙালি রাজনীতিতে ভদ্রলোক শ্রেণির ভূমিকার যে কূটিল দিককে নথিবদ্ধ করেছেন তা আমাদের চর্চার বিষয় হয়ে উঠে না। কারণ একটি সমান্তরাল ধারা হিসেবে গূঢ় রহস্যের অনুসন্ধানের জন্য বৌদ্ধিক চর্চা ও বিস্তৃত হৃদয়বৃত্তি প্রায় নিঃশেষিত এবং তাই চিন্তা-উদ্রেককারী বৌদ্ধিক অবদানও একেবারে তলানিতে। তাই বরাকের বুদ্ধিজীবী সমাজ যখন সঙ্গত কারণেই অসমীয়া উগ্রাজাতিয়বাদকে শঙ্কার বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করেন তখন যান্ত্রিক সংজ্ঞায় এক অচল অনড় ধারণার মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখেন। আসামের উগ্রজাতিয়বাদী রাজনীতিকেও বাস্তব পরিস্থিতির বাস্তব ব্যাখ্যার হাতিয়ার দিয়ে বিচার করে দেখেন না। তার চাইতেও গুরুত্ত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে এই যে এই বৌদ্ধিক চর্চা কখনোই  শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য গড়ে তোলার প্রেক্ষাপট থেকে জাতি-ধর্মের বা পরিচিতির প্রশ্নকে বিচার করে না এবং ফলে উগ্রজাতীয়তাবাদ ও পরিচিতির প্রশ্ন সামগ্রীকতার বাইরে এক স্থাণু বিষয় হিসেবে উপস্থাপিত করার প্রবণতা প্রাধান্য পায়।

উগ্রজাতিয়তাবাদ ও বৌদ্ধিক দীনতা
শাসকীয় রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহের পর্যবেক্ষণ আমাদেরকে সমাজের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় যা মনোযোগী দৃষ্টি দাবি করে। কিন্তু বরাকের বৌদ্ধিক সমাজ আসামের অতীত ইতিহাস ও সাম্প্রতিক ঘটনাবলিকে হেতুবাদের এক ছাঁচে ফেলে দেখতেই অভ্যস্ত, তাদের দৃষ্টি এর বাইরে কখনওই নিবদ্ধ হয়নি। আসু আন্দোলন শুরুর পূর্ববর্তী পর্যায়ে উগ্রজাতিয়তাবাদী কাঠামোর অভ্যন্তরে ‘আলি-কুলি-বাঙালির(হিন্দু ও মুসলমান)’ যে কংগ্রেসী ভারসাম্যের নমনীয় রাজনীতি প্রাধান্য বিস্তার করে ছিল, আসু আন্দোলন ও অগপ’র ক্ষমতারোহণ এই ভারসাম্যকে ভেঙে দিয়ে আগ্রাসী উগ্রজাতিয়তাবাদের প্রথম পর্যায়ের ইতি টানে এবং এক স্বাভাবিক মৃত্যুর পথে যাত্রার সূচনা করে। নেলী-গুহপুর-মোকালমোয়ায় বাঙালি মুসলিম বিরোধী দাঙা করার জন্য অসমীয়া আবেগে যারা ‘ওলাই আহিছিল’, তারা এই ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে যেতে আরম্ভ করে। পরবর্তীতে আলফার সন্ত্রাসবাদী রাজনীতিও জনসমর্থন হারানোর স্বাভাবিক পড়িণতি লাভ করে। এই দীর্ঘ পর্যায়ে অসমীয়া সমাজের অভ্যন্তরিণ শ্রেণি বিভাজন যে আরও বিস্তৃত হয়ে শ্রেণি সম্পর্কের পুনর্বিন্যাস ঘটাচ্ছে তার ইঙ্গিত পাওয়া যায় যখন অসমীয়া মধ্যশ্রেণির ইতিহাসের লেখক ড০ প্রফুল্ল মহন্ত অসম সাহিত্য সভার মত অসমীয়া জাতীয় সংগঠনের প্রকাশ্য অধিবেশনে তাঁর সুচিন্তিত লিখিত ভাষণে অসমীয়া সমাজের আজকের দূরবস্থার জন্য অসমীয়া বর্ণহিন্দু সমাজ, সাহিত্য সভা ও কংগ্রেসের সংকীর্ণ নীতিকে দায়ী করেন। এধরনের সাহসী প্রকাশ্য বয়ান উত্থাপিত হওয়া অসমীয়া সমাজের অভ্যন্তরিণ শ্রেণি-সম্পর্কের পুনর্বিন্যাসের এক অন্তর্বর্তীকালকে সূচিত করে। এমতাবস্থায় ষাটের দশকের কৃষক আন্দোলনে নিহিত ধারায় এক নতুন রূপে বাঙালি-অসমীয়া নির্বিশেষে মেহনতি মানুষের ঐক্যের প্রশ্নটি আবারও রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্তু মূলস্রোতের বামপন্থী বুদ্ধিজীবীদের বৌদ্ধিক কাঙালপনা এই সম্ভাবনাকে সমূলে ধ্বংস করে দেওয়ার ইন্ধন যোগায়। ভারতীয় পরিচিতির রাজনীতির চোরাস্রোতের যখন বিস্ফোরণ ঘটেছিল ভিপি সিং-এর আমলে মণ্ডল রাজনীতির মধ্য দিয়ে, তখন এই বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা পরিচিতির প্রশ্নকে অবজ্ঞা করেছিলেন উৎপাদনের হাতিয়ারের মালিকানাকে একমাত্র ও ভ্রান্ত মার্কসীয় শ্রেণি-রূপ হিসেবে বিবেচনা করে। এখন পরিচিতির রাজনীতি তার কার্যক্ষমতা হারাতে বসেছে প্রধানত তিনটি কারণে – (১) পরিচিতির প্রশ্নকে ক্ষমতার ভারসাম্য গড়ে তোলার একমাত্রিক রূপ হিসেবে দেখা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ সামাজিক পরিবর্তনকে কখনওই বিচার্য বিষয় হিসেবে রাখা হয়নি এবং বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলারও তেমন জোরদার প্রচেষ্টা হয়নি, যেটুকু হয়েছে তা তথাকথিত সুবিধাবাধী ‘সোস্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর মধ্যে সীমিত রয়েছে। (২) বিত্ত পুঁজি, বণিক পুঁজি ও কৃষিতে উদ্বৃত্ত মুনাফা আরোহণের মাধ্যমে সঞ্চিত পুঁজির অধীনে গ্রামাঞ্চলে শ্রেণি সম্পর্কের প্রভূত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। (৩) এই দুটি কারণ পরিচিতির গণ্ডির শাসকীয় রাজনীতিকে বিভ্রান্ত করে তুলেছে। এজন্যই বাঙালি স্বার্থে কথা বলার এক প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে কংগ্রেস-বিজেপির বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে এবং একাজটি তারা করতে পারছেন তাদের অসমীয়া কোর-কনস্টিটুয়্যান্সিকে হস্টাইল না করেই। কিন্তু বাস্তব যে তাদের দিশেহারা করে তুলেছে তা তাদের শারীরিক-ভাষাতেই ফুটে উঠছে। বিভ্রান্তির এই চালচিত্রটি অনুধাবন করা যায় সর্বভারতীয় ও রাজ্যিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দলের সর্বমোট ও জনগোষ্ঠীগত শতকরা ভোটপ্রাপ্তির বিস্তর তথ্যের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচারে। তারা বিভ্রান্ত কারণ আজকের বাস্তবতায় আসু-আন্দোলন পূর্ববর্তী ‘আলি-কুলি-বাঙালির’ কংগ্রেসি ভারসাম্যের রাজনীতিতে আর ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। অথচ এটাই কামনা করছেন বরাকের পরাজিত মূলস্রোতের বাঙালি বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা। যখন পরিচিতির রাজনীতি শ্রেণি রাজনীতির অধীন হয়ে পড়ার এক পরিবর্তনশীল পর্যায় চলছে, তখন তাদের পরিচিতির প্রশ্ন নিয়ে কালঘুম ভাঙতে শুরু করছে। তবে তারা তাত্বিকভাবে যে কথা বলেন, বাস্তব রাজনীতিতে পালন করেন অন্য ভূমিকা। তাদের এই বাস্তববাদ সুবিধাবাদ ও বৌদ্ধিক দীনতারই নামান্তর। এই দীনতা বরাকের বাস্তব প্রেক্ষাপট থেকে খানিকটা বিচার করে দেখা যাক।

বরাক উপত্যকার বাস্তবতা
বাস্তবকে বোঝার জন্য কোন একটা শক্তিশালী বৈশিষ্ট্যকে মাধ্যম করে নেওয়া একটি মান্য পদ্ধতি। শুধুমাত্র বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে একে বিচার করলে অভিজ্ঞতাবাদের দোষে দুষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে দেখা দেয়। সুতরাং সাম্প্রতিক নির্বাচনকেই এই বিচারের প্রেক্ষাপট হিসেবে রাখা যেতে পারে। এই নিবন্ধে বিস্তৃত আলোচনার সুযোগ নেই, তাই বরাক উপত্যকার সমাজের কতকগুলো বৈশিষ্ট্যের মধ্যেই আলোচনাকে সীমাবদ্ধ রাখব। বরাকের নির্বাচন মানেই হিন্দু-মুসলিম বিভাজন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে যখন সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটানোর জোরদার প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল, তখন বরাকের দুটি সংসদীয় নির্বাচনে চূড়ান্ত ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটেনি। অনেকে এটাকে দেখেন শাসকীয় রাজনীতির বিভিন্ন লবির স্বার্থের সংঘাতের পরিণতি হিসেবে, কিন্তু এহ বাহ্য। অনেকে আবার মনে করেন করিমগঞ্জে যদি মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ থাকত এবং এইউডিএফের মুসলিম প্রার্থী হতো এবং শিলচরে যদি গেল বারের মত আজমল প্রার্থী হতেন, তাহলে ভোটিং প্যাটার্ন ভিন্ন হতো – এই বয়ানের মধ্যে হয়ত কিছু সত্যতা আছে। কিন্তু এই সত্যতা এবারের ভোটে যে মানসিকতা পরিবর্তনের বাস্তব বার্তা বহন করছে তাকে খণ্ডন করে না। আমাদের স্মরণে রাখা উচিত যে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপির ভোট প্রাপ্তি মাত্র ৩১%, এমনকি উত্তরপ্রদেশে যেখানে সবচাইতে বেশি মেরুকরণের রাজনীতি হয়েছে সেখানেও এসপি-বিএসপি’র ভোটের যোগফল বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের সমান। আমাদের নির্বাচনী পদ্ধতির জন্য ২২.২% ভোট পেয়েও বিএসপি উত্তরপ্রদেশে একটি আসনও লাভ করেনি। যাইহউক, বরাকের ভোট চালচিত্রের এই পরিবর্তনের আসল কারণটি অনুধাবন করা জরুরি। বরাক উপত্যকা তথা আসামের গ্রামাঞ্চলে সর্বশেষ এনএসএস স্যাম্পল সার্ভে রিপোর্টের তথ্য এবং আমাদের অনেকেরই বাস্তব অভিজ্ঞতা দেখায় যে বরাকের গ্রামাঞ্চলে কৃষকের সংখ্যা দ্রুতগতিতে কমছে এবং তার স্থান নিচ্ছে মজুরি শ্রমিকের ক্রমাগত বৃদ্ধি। কৃষকের মানসিক পৃথিবী বাস্তব উৎপাদনের উপকরণের মালিকানা ও জমির সাথে ধর্মীয় বন্ধনের জন্য সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বয়ানে আকৃষ্ট হওয়ার অনুকূল হয়ে থাকে, মজুরি শ্রমিকের ক্ষেত্রে যে আবেদন তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলার সূত্রপাত ঘটায় এবং এক ভিন্ন বয়ান তাদের কর্ণগোচর হওয়ার উপযোগী হয়ে থাকে। এই ভিন্ন সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী বয়ান গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে দিতে বামপন্থী ও মানবতাবাদী বুদ্ধিজীবীদের একাংশের নিরলস প্রয়াসও পরিলক্ষিত হয়েছে বরাকে উপত্যকার উর্বর মাটিতে। এই পর্যবেক্ষণের আরও বিস্তৃত ব্যাখ্যা থেকে বিরত থেকে বরাকের মধ্যবিত্ত শ্রেণির একাংশের স্বরূপ নিয়ে কিছু কথা বলে নেওয়া যাক।

বরাকের মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ও আধিপত্যের পুনর্বিন্যাস

বরাকের মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণির এক বৃহৎ অংশ গঠিত হয় অবিভাসী বাঙালিদের মধ্য থেকে যারা উদ্বাস্তু হয়ে পূববাংলার সব সা-সম্পত্তি ত্যাগ করে এখানে এসেছিলেন। এই উদ্বাস্তু বাঙালিদের        পূর্ব-প্রজন্মের সঞ্চিত ধন-সম্পত্তি যা পরবর্তী প্রজন্মে হস্তান্তরিত হয় এবং যা হস্তান্তরিত হওয়ার মধ্য দিয়ে সম্পত্তির মালিকানাজনিত অসাম্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম গড়িয়ে চলে তা বাধা প্রাপ্ত হয়। অর্থাৎ এই উদ্বাস্তু বাঙালিদের মধ্যে শ্রেণি-বর্ণগত বিভাজনের মানিসকতা বিরাজ করলেও শুরুতে সম্পত্তির মালিকানাজনিত ভিত্তি ভেঙে যায়। কাঠামোগত এই সাম্য শ্রেণি-বর্ণ নির্বিশেষে সব উদ্বাস্তু বাঙালিদের মধ্যে একধরনের আত্মীয়তাবোধ জাগ্রত করে, কিন্তু সেই বোধ বেশিদিন স্থায়ী হয় না। পরবর্তী অভ্যন্তরীণ বিভাজনকে আমরা স্থূলরূপে এভাবে চিহ্নিত করতে পারি। প্রথমত উচ্চবর্ণের বাঙালি উদ্বাস্তুরা তাদের সামাজিক মর্যাদাকে ব্যবহার করে শহরে বসত স্থাপন করেন, গ্রামাঞ্চলেও যারা চলে যান তারাও এই সম্পর্ককে ব্যবহার করে অন্যান্যদের তূলনায় সুবিধাজনক স্থিতি লাভ করতে সক্ষম হন। বাকীরা উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নিয়ে পরবর্তীতে ক্ষুদ্র-কৃষক, বিভিন্ন ধরনের কায়িক শ্রম-নির্ভর পেশা ও কৃষি-শ্রমিক হয়ে গ্রামাঞ্চলে বসত স্থাপন করেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে বর্ণহিন্দুরা সরকারি চাকুরির মাধ্যমে প্রশাসন যন্ত্রের অভিন্ন অঙ্গ হয়ে ওঠেন এবং কৃষি সম্পত্তির পরিবর্তে সরকারি অনুদান ও সুবিধা যখন বেঁচে থাকার মুখ্য ধারা হয়ে ওঠে তখন বর্ণহিন্দু উদ্বাস্তুরা বাকীদের উপর একধরনের ঢিলেঢালা আধিপত্য স্থাপন করতে সক্ষম হন, যেহেতু আসামের শিক্ষিত মুসলিম অভিজাত পরিবারের এক বড় অংশ দেশভাগের সময় পূর্ব-পাকিস্তানে চলে যান। কিন্তু সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধর্মীয় বন্ধনের কোন যোগসূত্র না থাকায় মুসলিমরা স্বাভাবিকভাবেই এই আধিপত্য মেনে নিতে পারেনি। এই দ্বন্দ্ব হিন্দু-মুসলিম মানসিক দূরত্বে এক কাঠামোগত ভিত্তি রচনা করে। তৃতীয় পর্যায়ে বিশেষ করে আশির দশক থেকে যখন এক মুসলিম মধ্যশ্রেণি কৃষিক্ষেত্র ত্যাগ করে চাকুরীজীবী হয়ে উঠে আসছে এবং যখন পরিকাঠামোগত বিনিয়োগ, ফিনান্স পুঁজির প্রাধাণ্য, উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর তূলনায় কৃষি-উৎপাদিত সামগ্রীর ব্যয় বৃদ্ধির ফলে কৃষি ক্ষেত্রের আয় থেকে জীবন নির্বাহ দুরূহ হয়ে উঠছে, যখন পরিকাঠামো নির্মাণ ও বাণিজ্যিক উৎপাদনে মাঝারি ও ক্ষুদ্র কৃষকরা মজুরি শ্রমিক হিসেবে নিজের এলাকায় ও অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে যুক্ত হতে আরম্ভ করেছে এবং বর্তমানে কৃষকের তূলনায় তার সংখ্যাধিক্য দেখা দিয়েছে, বেঁচে থাকার রসদ সংগ্রহে সরকারি প্রশাসনিক যন্ত্রের কার্যকারিতা যখন কমে আসছে, তখন আধিপত্যের এই রূপের এক নতুন পুনর্বিন্যাস জরুরি হয়ে উঠেছে, আপাত শান্তির এক আবরণের তলায় অশান্ত ডামাডোলের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কারা এই পুনর্বিন্যাসের নতুন এক স্থায়ী রূপের নেতৃত্ব দেবে এ এক গুরুত্ত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বরাকের গণতান্ত্রিক ও বামপন্থী বুদ্ধিজীবীদের বৌদ্ধিক দেউলিয়াপনা এ প্রশ্নে কোন সদুত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রকে এখনও ঘোলাটে করে রেখেছে।   

Strategic Dilemma of the Indian left

Posted by স্বাভিমান Labels: , , , , , , , ,



Arup Baisya


(C)Image
(This article has been written by the author in early March, 2014. Recently lot of new data and their theoretical interpretations by many experts in the field of economics and sociology are pouring in for further review on this issue) 

Reformism versus adventurism
            A leading section of the left circle mechanically delineates the path of establishing the working class hegemony as the war of maneuver in the East in contradistinction to the war of position in the west. Both the traditional parliamentary left and the extreme left strategically placed themselves in practice completely in a war of position and the war of maneuver respectively in the post seventies. Though this phase is heavily burdened with their past legacy, the post seventies period demands special attention in view of the neo-liberal phase of capitalism which differs in significant way from the post-war boom and welfarism. This phase is marked by many new dimensions in the scene of global capitalism due to the far-reaching consequence of the process of centralisation-cum-globalisation of finance capital, but it does not perforce indicate a radical break from Lenin’s prognostication on monopoly capital and imperialism. The mere counterposition of “war of position” to ”war of maneuver” in any Marxist strategy in the end becomes an opposition between reformism and adventurism. In the history of communist movement, once the united front had become equated with the war of position, against maneuverist strategies of adventurist period of all-out confrontation, it threatened to slide towards a gradualist reformism that was the mirror image of the ultra-leftist immediacy of the positions it proposed to replace.

Misconstrued notion
           The crisis of the traditional left is ingrained in a serious political error. The left’s implicit and explicit politics was that capitalism was standardising Indian society, that proletarianisation would reduce rural “idiocy,” that, like the freedom struggle, class struggle would reduce obscurantism, communalism and casteism, and, finally the community fabric of society would be more and more transformed into a class fabric. The parliamentary or mainstream Indian left like CPM and CPI has been visibly changing the strategy in practice from the seventies to war of position alone and started equating this with the united front activity and thus losing the zeal to build mass movement. Theoretically they accept the semi-feudal character of the Indian state, but with an understanding that the national bourgeoisie is at the helm of affairs moulding the capitalist formations.
           However, the development of capitalism in India has not resulted in submerging the communities in great socio-political development. Rather, dormant communities have now woken up, awakened communities have become restive, and a competitive polity based on a regime of subsidies and patronage has created communities out of sub-communities. The left offered neither non-violent resistance at Ayodhya, nor did it order a halt to Mr. Advani’s march at Purulia. More importantly, the slogans and methods to preach secularism were imprisoned by the rhetoric of the Nehruvite liberal age.
           On the other hand, the extreme left like the Indian Maoists are engrossed in a static mindset and fail to notice the internal dynamics of societal change under the influence of the global capitalism and Indian Democracy even in the hinterlands within the over-arching semi-feudal structure.
             Land reform was undertaken haltingly through the 1950s to the end of the 1970s. NSSO survey report, 2003-04 shows that the landless household is 31.12 per cent and the percentage of households having more than 3 hectares of land is only 5.19 per cent (of this, 3.06 per cent  has 3-5 hectares and 0.52 per cent has more than 10 hectares). Agricultural statistics, 2013 published by Directorate of Economics and Statistics, Ministry of Agriculture, Government of India, reveals that in 1951, agricultural cultivators was 71.9 per cent of total rural population and agricultural labourer was 28.1 per cent, but these figure changed to 45.1 per cent and 54.9 per cent respectively in the year 2011. The total amount of land operated by big farmers has decreased by roughly 38 per cent, accompanied by a very substantial jump in the area under small and very small operational holdings (Ministry of Agriculture 2013). The NSS data also show that the share of agricultural workers among all male rural workers declined steadily from 80.6 per cent in 1977-8 to 71.7 per cent 1989-90 and for rural females this share dropped from 88.1 per cent in 1977-8 to 81.4 per cent in 1989-90 (as noted in Jha 1997). These figures imply that non-agricultural sector absorbed about 70 per cent of the total increase in the rural workforce between 1977-8 and 1989-90 (Social Development report 2012, Council for social development). These changes in the rural landscape have substantially changed the balance of forces in the semi-feudal relations of production, and this itself demands special attention to formulate new programme for left movement.

Different phases of transition 
               The series of successful revolutionary upsurge that had been first witnessed in Russia and ended with the last revolutionary victory in Vietnam in May 1975 was based on the premise of the workers-peasant alliance built in the backdrop of rising peasant militancy. But widespread peasant militant movements like Tebhaga, Telangana could not be transformed into revolutionary social movement in India under the leadership of working class. The objective barriers existed in India, as Utsa Pattanaik pointed out, were : “for one, the strength and efficiency, honed over two centuries, of the repressive apparatus of the unitary British colonial state, as compared to moribund tsarism in Russia or the internal bickering of rival imperialist powers in seni-colonial China. For another, the relative strength of the English-educated Indian bourgeoisie which seized the leadership of the national movement particularly after Gandhiji’s returm from South Africa and his brilliant political innovation – the satyagraha, which perfectly suited the requirement of a movement which wished to stave off revolution while taking over the legacy of power.”  In addition to her diagnosis of objective difficulties, it would be pertinent to say that the Indian peasant movement of that period had seldom crossed the caste-community fault lines built into Indian semi-feudal hierarchical caste-structure and could not change the upper-caste moorings of the English-educated class who acted as the colonial intermediaries.
In the country like India with emerging market economy, there occurred many changes in the structure of workers and peasants over the period from colonial rule of de-industrialisation to the dirigiste industrial development to the present phase of imperialist globalisation. It can be claimed that the de-industrialisation was merely a decline from a development which had been specially stimulated by the activities of the European merchants themselves in buying Indian cloth for export to other countries. Hence the major part of the de-industrialisation must be attributed to the displacement of traditional manufacturers as suppliers of consumption goods to the internal Indian marker.
                Characterising the colonial de-industrialisation, Amiya Kumar Bagchi wrote : “Capitalist industrialization up to the phase of maturity is attended by at least three types of changes : (a) an increase in the proportion of the population engaged in secondary industry  (b) a sustained increase in per capita income and (c) a continual rise in the degree of mechanization in industry  -- and to lesser extent perhaps, in agriculture. The reversal of any of these conditions over a long period of time can be characterized as de-industrialisation. Indian experienced the reversal of the first two conditions from probably 1820 up to 1914.”
            During the post independence period up to the seventies, a new industrial policy of import substitution of manufactured consumer goods with a view to catching up the developed western world was followed. But that policy was heavily dependent on the import of heavy machineries and thus remained completely entangled with vicissitudes of the global market and the policy framework of global capitalists. The capitalist classes of the India cannot step up their rates of accumulation without running into inflationary, and balance of payments, difficulties, because they have to reckon with the formidable influence exerted on world economy by the advanced capitalist classes, and also due to the fear of the unrest of the Indian peasantry and the proletariat, the capitalist classes of India have to adjust to the demands of the property-owning strata in control of sector characterized by pre-capitalist relations. The neo-liberal policy framework that was initiated by the Indian Government in the backdrop of balance of payment crisis let loose an onslaught on the labour at the behest of Global capitalist class. The left in power in the Indian states especially in West Bengal also succumbed to this pressure with a policy paralysis.

Dilemma of the left
             The total abdication of its role by a supposedly pro-labour government in West Bengal further worsened the situation. In 1988, for example, of the total 228 work stoppage, lock-outs accounted for 85 per cent and strikes 15 per cent: 88 per cent of mandays were lost because of lock-outs and 12 per cent because of strikes. Of the 246,053 workers affected, a majority (60 per cent) suffered owing to lock-outs. The average duration of a strike was 33.4 days and a lock-out 169 days. Lay-offs increased from 510 in 1985 to 1,572 in 1988. (Samaddar, Ranabir : 2013). The unions and the state both remained mute witness to the onslaught on workers during the decade. In fact, the unions often became part of a structure that resulted in managerial hegemony – just as the policies of the so called pro-labour State government did.
          The left, in principle, must always strategically place themselves in favour of the strike by labour on the capital with tactical variations during the period of boom and of recession of global capitalism marked by underdevelopment, restricted home market, stagflation, a large unorganized sector and technological restructuring of industry as argued by Lenin long ago. But the left in power in Bengal became mere witness of the strike by capital in the ‘80s. Left could have sided with the labour by initiating a policy of social security, co-operative management of the existing industries, building social infrastructure that also generates employments, and the support to increase in demand for indigenous commodities through state purchases, and also pushing the achievement of operation Barga further ahead progressively through land reform and boosting agricultural commercialisation and cooperation. But they dared not pursue this pro-labour path with a fear to face the hostility of the global capitalist class and reluctance of global investors who are interested in profiteering and in ensuring super-profit through the existence of pre-capitalist social relations with a skewed development model. The extreme left, especially the Maoists, on the other hand, failing to realise the change in the urban and rural social classes and the balance of forces evolved during the long period of post-independence capitalist re-construction and the existing parliamentary democracy put much emphasis on the immanence of the seizure of state power and on the combat with the coercive apparatuses of the state following the argumentation of the mechanical division of strategy in the Eastern and the Western countries.
             The change of agrarian social classes has diverse ramifications in the diverse geo-political regions of Indian nation. The distress condition in the cash crop areas shows the sign of landlord capitalism and strengthening of pre-capitalist relations and the caste-communities cleavages under the influence rentier financial and merchant capitalism. But the region like Bengal where left had undertaken land reform to a certain extent has unleashed the forces to carry forward agrarian commercialisation through the path of peasant capitalism. The proletarianisation of rural peasantry would have opened up the new vistas for working class unity and consciousness in both rural and urban sector, had the left in power not given much emphasis on the path of development basing on global capitalist investors, and the extreme left not marginalised themselves with the combatant role relying much on the politics of the barrel of the gun. Both the mainstream left and the extreme left have missed the opportunity to build the sustained struggle for social security, weakening of caste based pre-capitalist structure to ensure working class unity and consciousness. But the traditional left forces like CPI and CPIM  have been pursuing the misplaced legacy of strategic and tactical path of second communist international and Stalinist determinism without taking into cognisance the here and now of the post-independence Indian reality.

Marxism and Binary categories
             
        
(C)Image
   In defense of the Marxist dialectics, E P Thompson wrote :
  “Marxist theory…… can become a false consciousness if, instead of being used for the methodical investigation of reality through theory and practice, it is misused as a defence against that very reality……. Those who wish to deprive Marxism of its critical, subversive power and turn it into a affirmative doctrine, generally dig in behind a series of stereotyped statements which, in their abstraction, are as irrefutable as devoid of result.” Citing the Indian Marxist, he further reiterated : “…..If one considers for a moment the possible consequences if the Communist Party of India (One of the most unreconstructed Stalinist parties in the world) were to reinforce its existing anti-libertarian tendencies and contempt for ‘petit-bourgeois’ masses – tendencies amply displayed in its partnership in the recent emergency – with a dose of Althusserian arrogance; and if its largely bourgeois and intellectual upper cadres were to become theoretical practitioners; and if the opportunity to practice, not only in theory, but upon the body of India, should return  -- then we could expect nothing less than the re-enactment of the full repertoire of high Stalinism within the raging inferno of Indian ‘scarcity’.”
This argument is also applicable to CPI(M) to a great extent. The left front role in West Bengal in post seventies was guided from the premise that the Party is able to decide the best interest of the working class on the basis of Marxist ‘Science’, and to serve this interest through ‘ideological state apparatuses’. In this understanding, Marxism becomes an inert tool only to be handled by the Party to judge working class morality and in this framework working class becomes a passive onlooker who is only to be led and guided. Thus Mraxist science degenerates into deterministic formulae to be used to predict the future. Following this approach, both the variants of Indian left, the CPI-CPIM and Maoist, have conceptualised the reality in binary framework of opposite categories of war of position versus war of maneuver. Another such category is the civil society versus the political society. The interconnectedness of these two categories and their dialectical relation with the state are missed while strategising the revolutionary movement. When the broad-based strategy to build united front of all forms of movements for the rights of civil societies and the movements to resist the onslaught of the ruling classes of political societies are not mooted, it becomes apparent that the content of diverse mass-movements in India in this neo-liberal phase of economy against both the consent and coercion of the existing state is undermined. The two aspects of ruling class hegemony and domination, the consent and coercion, have been segregated by the two variants of the lefts in their formulations of actual practice. A new approach needs to be developed for the new left to emerge with a view to resolve the conflict between the forces of production and the relations of production in this neo-liberal phase of capitalism in the country like India.

References :

  1. The Gramscian Moment, Peter D. Thomas.
  2. Introduction to Daniel Thorner Memorial Letures, Edited by Alice Thorner.
  3. Colonialism and Indian Economy, by Amiya Kumar Bagchi.
  4. Passive Revolution in West Bengal, 1977-2011, by Ranabir Samaddar.
  5. Studies in the Development of Capitalism, Maurice Dobb.
  6. Poverty of Philosophy, E P Thompson           

স্বাভিমান:SWABHIMAN Headline Animator

^ Back to Top-উপরে ফিরে আসুন