“ এরাই আন্দোলন করব – আমরার দ্বারা অইত নায়, আমরা বরঞ্চ বাগড়া দিমু”

Posted by স্বাভিমান Labels: , , , ,






।। অরূপা মহাজন ।।
(অরুণোদয়ের জন্য)

            রাই আন্দোলন করব, আমরার দ্বারা অইত নায় এঅঞ্চলের একজন হিন্দু বুদ্ধিজীবীর এক পাসিং-রিমার্ক। কথার কথা শোনালেও মন্তব্যটির মধ্যে সারবত্তা রয়েছে। বাক্যবন্ধের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে হলে প্রেক্ষিত বিচার করেই এগোতে হবে। সম্প্রতি ইউডিএফ দলের বরাক উপত্যকা থেকে নির্বাচিত বিধায়ক, যিনি আবার এক ইসলামি ধর্মীয় সংগঠনের কর্মকর্তা, আসামের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে এবং বরাকের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। বিরোধী শিবিরের বিধায়ক হিসেবে বিভিন্ন গণসংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে সংগ্রামী মঞ্চ গঠন করে ইতিমধ্যে অনশন কর্মসূচীতে নেমে পড়েছেন এবং লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষণা করে অন্যান্য বিধায়কদের পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বলাই বাহুল্য, অন্যান্য বিধায়কদের থেকে তাঁর আন্দোলনের প্রতি তেমন কোন ইতিবাচক সাড়া মেলেনি, বরঞ্চ কোন কোন প্রতিনিধি এমনও বলেছেন যে আন্দোলন করে কোন কাজ হয় না। নিন্দুকেরা কানাঘুষো করছে যে তিনি তাঁর ইউডিএফ পরিচিতি থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে বরাকের নেতা হওয়ার যে চেষ্টা চালাচ্ছেন তাতে কংগ্রেসের দিকে পা-বাড়ানোর ইঙ্গিত নেই তো? এই নিন্দুকদের কথা যত কম চর্চা হয় ততই ভালো, কারণ এরা গণপ্রক্রিয়াকে কখনোই গুরুত্ব দেবে না। কংগ্রেস-সরকার বিরোধী আন্দোলনে যে মানুষের মধ্যে কংগ্রেস বিরোধিতা তীব্র হবে সেটা তারা বুঝতে চান না। এই আন্দোলন নিয়ে জোর চর্চার মধ্যেই বরাকের এক প্রতিষ্ঠিত বুদ্ধিজীবীর এই মন্তব্য। এই মন্তব্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে বরাকের আসল স্বরূপ এবং কঠোর বাস্তব।
           বিধায়কের নেতৃত্বে এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে করা এই মন্তব্যে এরাই মানে যে মুসলমানরাই এবং আমরা মানে যে শহুরে হিন্দু মধ্যবিত্ত তা এখানে একেবারেই প্রচ্ছন্ন। বরাকের শহুরে হিন্দু মধ্যবিত্ত নেতৃত্ব অনেকবারই বরাকের প্রতি বঞ্চনার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তা কখনোই   গ্রাম-বরাকের মানুষকে আন্দোলিত করা তো দূরে থাক, কোন বার্তা তাদের কানে গিয়েই পৌঁছোয়নি।    বার্তা প্রবাহের জন্য যেমনি মিডিয়া প্রয়োজন, ঠিক তেমনি আন্দোলনের আহ্বান আম-জনতার কানে পৌঁছার জন্য মাধ্যমের দরকার। এক্ষেত্রে এই মাধ্যমটি কাঠামো উপরিকাঠামো ও কার্যক্রমের (Structural – super structural and functional) মিলিত এক উপাদান। শিলচরের শিক্ষিত হিন্দু মধ্যবিত্ত শ্রেণিটির গ্রামের সাথে কোন আত্মীয়তার বাঁধন নেই, যে কিছু সংখ্যকের গ্রামে বাড়ি ছিল তারাও পাততাড়ি গুটিয়ে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে শহর বাসিন্দা, অনেকেই ছেলে-মেয়েদের বাইরে পাঠিয়ে কলকাতার মফঃস্বলে ফ্ল্যাট-বাড়ি কিনে পরবাসী হওয়ার মনোবাসনা বাস্তবায়িত করতে ব্যস্ত। ব্লকের বিডিও শহর শিলচরের বাঙালি বর্ণহিন্দু চৌধুরী, না ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার অসমীয়া চৌধুরী তাতে গ্রামের মানুষের কোন ইতরবিশেষ ফারাক অনুভূত হয়না। বার্তা বহন করার সামাজিক সম্পর্কের কাঠামোটি মোটামুটিভাবে অনুপস্থিত। উপরিকাঠামো হিসেবে মুসলিম বিদ্বেষি হিন্দু মানসিকতাই একমাত্র মতাদর্শ যা দিয়ে গ্রামীণ হিন্দু মানুষের সাথে যোগসূত্র স্থাপন করা তাদের কাছে সম্ভব হয়, এমন কোন সেকুলার মতাদর্শ নেই যা দিয়ে এই কাজটি সমাধা করা যায়। এমন কোন কার্যকরী সংস্থা নেই যার শহুরে শিক্ষিত নেতৃস্থানীয় সদস্যরা গ্রামে গিয়ে মানুষকে আন্দোলনের বার্তা ও ঐক্যের আদর্শের কথা বোঝাবে এবং গ্রামের সাথে যোগসূত্র স্থাপনের জন্য নতূন মানুষ তৈরি করবে। উল্টোদিকে, শহরের মুসলমান মধ্যবিত্ত সমাজ গ্রাম থেকে উঠে আসা এবং গ্রামের সাথে তাদের নিবিড় জীবন্ত সম্পর্ক রয়েছে। তাদেরকে পরধর্মের প্রতি বিদ্বেষ প্রচার করে নিজেদের ধর্মীয় ঐক্য বজায় রাখতে হয় না এবং সে অর্থে এই ইসলাম নিজেই এক সেকুলার ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। কোন এক বিশেষ মুহূর্ত কিংবা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাৎক্ষনিকভাবে সৃষ্ট বিদ্বেষের মনোভাব বাদ দিলে, ধর্মীয় বিদ্বেষের মনোভাব প্রতিনিয়ত সামাজিক চর্চার বিষয় হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকে না, উপরুল্লিখিত আমরার মধ্যে যা বিদ্যমান এক চর্চার বিষয়। তারা যখন রাষ্ট্রযন্ত্রের কোন অংশকে শোষণ-বঞ্চনার হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে, তখন তারা তাদের প্রতিবেশিদের দিকে ঐক্যের হাত বাড়িয়ে দিতে উদগ্রীব হয়ে থাকে। কিন্তু এই আমরার সাম্প্রদায়িক দিব্যদৃষ্টি তাদের হাতের রেখাচিত্রে বাংলাদেশের মানচিত্র দেখে, তকির নিচে লুকিয়ে থাকা ছুরি কল্পনা করে যেন ঐ হাত তকির দিকে যাবে এবং আমরার বুকের দিকে ঘুরে আসবে। একথা হলফ করে বলা যায়, সাধারণভাবে গ্রামাঞ্চলের মুসলিম সমাজের আচার-ব্যবহার (অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্তরা সামাজিক মদতে নয়, রাজনৈতিক মদতেই পরিপুষ্ট) ঐক্য গড়ে তোলার সহায়ক, বরঞ্চ হিন্দু সমাজের মনোজগত ও সামাজিক জগত এই ঐক্যের পরিপন্থী। সুতরাং, উপরুল্লিখিত মন্তব্যটিকে আরেকটু প্রসারিত করে বলা যায়, ''এরাই আন্দোলন করব আমরার দ্বারা অইত নায়, আমরা বরঞ্চ বাগড়া দিমু।        তবে এই মন্তব্যের অন্তর্নিহিত সাধারণ বাস্তব আমরা ওরার বিভাজন দূর করে আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্র তৈরি করে না। কিন্তু ইতিমধ্যে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়েছে, যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা-ওরা মিলে আমরা সবাই এক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সূচনা করতে পারে।
          বরাক ঊপত্যকার গ্রামীণ শ্রমিক, কঠোর পরিশ্রমী কৃষক সমাজের গরিষ্ঠাংশই মুসলিম সমাজভূক্ত। জনসংখ্যা ও দৈহিক শ্রমের মাত্রার দিক থেকে এরাই চোখে পড়ার মত। চা-শ্রমিক ছাড়া শহরের দিন-হাজিরার দৈহিক শ্রম ও বিভিন্ন নির্মাণ শ্রমিকদের মধ্যে ঝাড়খণ্ডী-আদিবাসী ও কৈবর্তদের বিশেষ উপস্থিতি রয়েছে, কিন্তু দক্ষ-শ্রমিকের গরিষ্ঠাংশই মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত। গ্রামীন আধিপত্যকারী শ্রেণির আধিপত্যের ভিত্তি হচ্ছে জমির মালিক ও মহাজন, তারাই আবার সরকারি অনুদানের মধ্যসত্ত্বভোগী ও মাঝারি নিয়ন্ত্রক এবং অন্যদিকে দিসপুরের তাবেদার রাজনৈতিক শ্রেণির তল্পিবাহক। এই দুয়ের মাঝখানে ছোট চাকুরে, ছোট দোকানদার ও ছোট জমির মালিক কৃষক পরিবার। গত বিশ-ত্রিশ বছর আগেও এই ছিল সাদামাটাভাবে বরাকের গ্রামাঞ্চলের বাস্তব চিত্র।
          বিগত বছরগুলিতে এই বাস্তব চিত্রের মাত্রাগত ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে সামাজিক সম্পর্কের উপরও খানিকটা প্রভাব বিস্তার করেছে। বরাকের কৃষিতে গরু-লাঙ্গলের ব্যবহার একেবারেই কমে গেছে, তার জায়গা নিয়েছে পাওয়ার-টিলার ও ট্র্যাক্টর। ধানবীজের বৈচিত্রময় ফসলের জায়গা নিয়েছে বাজার নিয়ন্ত্রিত গুটিকয় ধানবীজ ও তার পরিপূরক সার, কম্যুনিটি ফিসারিজের জায়গা নিচ্ছে ব্যক্তিমালিকানাধীন ফিসারিজ। এশিয়ান ডেভেলাপমেন্ট ব্যাঙ্ক ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের থেকে ধারের অর্থে গড়ে উঠছে বিভিন্ন ধরণের ইমারত, পাওয়ার লাইন, টাওয়ার লাইন ও মহাসড়ক। এইসব কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে পুরোনো মধ্যসত্ত্বভোগীদের সাথে নতূন আরেকদল ঠিকাদার-সাপ্লায়ার গোষ্ঠী জন্ম নিয়েছে। পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে উঠে এসেছে আরেকদল প্রতিপত্তিশালী গোষ্ঠী যারা এনরেগা সহ পঞ্চায়েত বিলি-বন্টনের ক্ষেত্রে ফড়ে-দালালের ভূমিকায় লিপ্ত। বহু পঞ্চায়েত প্রতিনিধি নব্য ধনিরা এখন ট্র্যাক্টর-পাওয়ার টিলার, গাড়ি-বাড়ির অলিখিত মালিক। পুরোনো ও নতূন মিলে এই গোষ্ঠীটি সম্প্রদায়গতভাবে মিশ্র চরিত্রের এবং বড়-মাঝারি ও ক্ষুদ্র মাপের স্তরতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত এই গোষ্ঠীটি একে অপরের উপর নির্ভরশীল। এই নির্ভরশীলতার ক্ষেত্রে দুর্নীতি এক মুখ্য ভূমিকায় রয়েছে এবং এভাবে এরা দিল্লি-দিশপুর থেকে বরাকের দালাল রাজনৈতিক নেতৃত্ব হয়ে এক শৃঙ্খলের মধ্যে আবদ্ধ রয়েছে। তাদের নিজেদের মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্ব দেখা দিলেও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার প্রধান গ্যারান্টি। রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার দূরবস্থার জন্য আমরা যখন ট্রান্সপোর্ট লবিকে দায়ী করি, তখন আমাদের একথাও স্মরণে রাখতে হয় যে বরাকের রাজনৈতিক নেতৃত্বের কত সংখ্যক গাড়ি এই ট্রান্সপোর্ট লবির অধীনে প্রতিদিন শিলচরগুয়াহাটির দূর্গম পথ পাড়ি দেয়। বরাকের প্রতি বঞ্চনার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানোর ক্ষেত্রে এই গোষ্ঠীর আত্মশক্তি স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল হলেও, সামাজিক সংঘাত প্রশমিত করে রাখার ক্ষেত্রে তাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কারণ সামাজিক সংঘাত বেশিদূর এগোলে বিভিন্ন সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা এই গোষ্ঠীটি তাদের আপাত-শান্তিপূর্ণ স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা দেখে।
          অন্যদিকে এক ব্যাপক অংশের মানুষ পরিবার প্রতিপালনের জন্য অসংগঠিত শ্রমিক হিসেবে জড়িয়ে পড়ছে এই কর্মকাণ্ডে কায়িক শ্রমের যোগান দিতে। আগে যেসব ব্যাপক অংশের গরিব ও মাঝারি কৃষক কৃষিকাজ করেই সংসারের ব্যয় সংকুলান করতে সক্ষম ছিল, তারাই এখন এই ব্যাপক অসংগঠিত শ্রমিক। এই অসংগঠিত শ্রমিক দলে মুসলিম ও চা-জনগোষ্ঠীর লোকদের প্রাধান্য থাকলেও, আর্থিক সংকট সব সম্প্রদায়ের মানুষকেই এই দলে টেনে এনেছে। উপরের স্তরের চাকুরিজীবী যারা মোটা অংকের মাইনে পান শতাংশের হিসেবে তাদের শক্তি একেবারেই নগণ্য এবং নিজেরা দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকুক বা নাই থাকুক দুর্নীতির জন্য এই ব্যবস্থার তারা সমালোচক কিন্তু এর দাওয়াই হিসেবে এখনও এরা আর্থিক উদারনীতিরই পক্ষে। তবে মধ্য ও নিম্ন স্তরের স্বল্প মাইনের সরকারিবেসরকারি চাকুরিজীবীরা উদারবাদী অর্থনীতির ব্যাপক কুপ্রভাবের কঠোর বাস্তবে অতীষ্ঠ। খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি ব্যাপক ক্ষুদে দোকানদারদেরও শঙ্কিত করে তুলছে। এছাড়া রয়েছে চা-শ্রমিক ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র-মাঝারি ও ভারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা। চা-শ্রমিক ছাড়া অন্যান্য শিল্প-শ্রমিকরা সংখ্যায় কম হলেও, এদেরও সম্প্রদায়গত গঠন মিশ্র চরিত্রের। এই ব্যাপক সংগঠিত-অসংগঠিত শ্রমিক ও নিম্নস্তরের মাস-মাইনের চাকুরিজীবীদের মধ্যে পূর্বের দেশজোড়া       দলিত-অবিসি জাগরণের এবং বর্তমানের দেশ ও বিশ্বজোড়া শ্রমিক-কৃষক আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানের ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সুতরাং, এরাই বরাকের প্রতি বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রধান ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই যে বঞ্চনার বিরুদ্ধে যারা কথা বলেন তাদের মস্তিষ্কে এই বাস্তবতা কোন প্রভাব ফেলে না।
         বরাকের ইউডিএফ বিধায়কের অনশন কার্যসূচীতে এখন পর্যন্ত মানুষের ব্যাপক গণ-সমর্থন পরিলক্ষিত হয়নি। অনেকের মতে বিধায়ক হওয়ার আগে তাঁর যে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ছিল এবং দুর্নীতি বিরোধী ভাবমূর্তি ছিল, বিধায়ক হওয়ার পর তা তিনি বজায় রাখতে পারেননি এবং এরজন্যই তেমন জনসমর্থন মিলছে না। এই মতের যথার্থতা থাকলেও, যাদেরকে ভিত্তি করে এই আন্দোলন শক্তি সঞ্চয় করবে, বিধায়ক হিসেবে তাদের কোন বিষয় নিয়ে তিনি কোন কথা না বলাই জনমনকে আকর্ষিত করতে ব্যর্থ হওয়ার পেছনের মূল কারণ বলেই মনে হয়।   

A CLARION CALL TO UNITE AGAINST IMPERIALISM AND.....

Posted by স্বাভিমান Labels: , , , , , , , , , ,



A CLARION CALL TO THE PEOPLE TO UNITE AGAINST IMPERIALISM AND NEO-LIBERAL POLICY FROM A THOUSANDS STRONG MASS MEETING AND PROCESSION OF ASSAM MOJURI SRAMEEK UNION


The News Published in Dainik Samayik Prasanga, 15th Nov. 2011 issue 
            This prgramme organised by Assam Mojuri Srameek Union has also been addressed by the office bearers of Barak Human Rights Protection Committe, Krishak Mukti Sangram Samiti, Citizens' Rights Protection Committee, Manipur Peoples' Struggle Committee along with Union's speakers and Mr Gautam Modi, Secretary, New Trade Union Initiative, New Delhi as guest speaker.
Press Releaese

A strong procession of thousands of union  
members entering the meeting venue
The neo-liberal policy and the policy of appeasement serving the corporate interest of the Indian big business houses and the global oligopolists, pursued by the Indian Govt. is increasing the inequality, poverty, unemployment and the prices of the essential commodities in leaps and bounds. In the list prepared on the basis of human development index, India’s place is 119 out of 129 countries. As per the Govt record of 2010, the rate of life expectancy of birth (years) is 64.4%, the rate of malnutrition in the age group of 6-59 months is 79%, below 3 years is 46% and that of below 6 years is 49%. As per Arjun Sengupta report, 77% of people has the average daily expenditure of Rs.20 or less. During the period of 1994-2008, the rate of employment per annum in the Govt organized sector is (-)0.65%  and that of private sector is 1.75%. The workers in the private IT-BPO and other private sectors, and the working class in the unorganized sector who constitute the absolute majority of the India workforce are being compelled to work with measly sum of wage. Almost 2.5 lakhs of farmers committed suicide till date due to agricultural crisis.
      The budgetary allocation of fund for social sector development is very meager. As per Reserve Bank report 2010, the expenditure in education is 2.98% of GDP, that of health is 1.27% and in other social investment is only 2.38% of GDP. With an intention to reduce the social sector investment still further, the Government is conspiring to show less BPL percentage, and pursuing the policy to allow the private capitalists to enter these social sector for making profit through commercialization.
A Sectional view of the mass-meeting
A Sectional view of the mass-meeting
   This policy of the Govt. has shattered the lives of the working class in general and especially the most backward communities and the regions like Barak Valley. All the beneficiary schemes and the scheme under the right to work act like NREGA are not being properly implemented due to the carelessness and insensitivity of the people in the Govt. implementing machineries. The jobcard holders are not getting 100 days work per year, and the state Govt is dillydallying in giving the unemployment allowance against their failure in providing jobs to the job-seekers, though the honourable high court has also passed an order to pay the unemployment allowance against a writ-petition filed by the Union. The tea-workers are not getting the minimum wage and the facilities they are entitled to get as per plantation labour act, even the tea-workers in Barak are getting less than their counterpart in Brahmaputra valley of the state of Assam.     
     In vehement opposition to the neo-liberal policy and on the basis of the demands mentioned below, and by being the part of the all India working class movement initiated by New Trade Union Initiative, the Union is determined to strengthen this movement further.
        Demands are – (1) All the arrear unemployment allowance under NREGA must be paid immediately. (2) 200 days of work per year should be provided to the jobcard-holders.   (3) On the basis of the guideline of Indian Labour Conference, 1957 and the directives of Supreme Court, the minimum wage of the tea-workers and the workers of all unorganized sectors must be fixed. (4) The wages of the tea-workers of Barak Valley should be at per with that of Brahmaputra Valley. (5) The universal PDS should be brought back in force. (6) The PRI and the Gramsabha should be strengthened for empowerment of the people. (7) The power should be decentralized through multi-layered autonomy to ensure equal rights of all communities. (8) The rampant corruption at all levels and the skyrocketing price hike of essential commodities must be arrested, and the Lokpal act must brought into force.

ASOM MOJURI SRAMEEK UNION
CACHAR DISTRICT COMMITTEE
H/O KHUDIRAM SARANI, SIBBARI ROAD, TARAPUR, SILCHAR-8, Regd. No 2287
_____________________________________________________________________________________________
    Ref:  Nil                                                                                  Date : 14.11.2011

      সরকার অনুসৃত নয়া আর্থিক নীতি ও দেশি-বিদেশি ব্যক্তিপুঁজি মালিকদের স্বার্থ রক্ষাকারী পদক্ষেপের ফলে সামাজিক অসাম্য, দরিদ্রতা, বেকারত্ব, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যের বৃদ্ধি ঘটে চলেছে। মানবোন্নয়নের সূচক অনুযায়ী ১২৯টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১১৯ নং। ২০১০-এর সরকারি হিসেব অনুযায়ী, জন্মবছরে বেঁচে থাকার হার ৬৪.৪%,     ৬ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সের শিশুর অপুষ্টির হার ৭৯%, ৩ বছরের নিচে শিশুর ৪৬% ও ৬ বছরের নিচে ৪৯% অপুষ্টিতে ভুগছে। অর্জুন সেনগুপ্ত কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ৭৭% লোকের দৈনিক গড় ব্যয় ২০ টাকা বা তার কম। ১৯৯৪-২০০৮-এই পিরিয়ডে সরকারি সংগঠিতখণ্ডে গড় বছরে নিয়োগের হার (-)০.৬৫% ও বেসরকারি ক্ষেত্রে ১.৭৫%। আইটি-বিপিও ও অন্যান্য বেসরকারি ক্ষেত্রগুলোতে এবং গরিষ্ঠাংশ শ্রমজীবী মানুষ অসংগঠিত ক্ষেত্রে অত্যন্ত নগণ্য মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। কৃষিক্ষেত্রে বিপর্যয়ের জন্য ইতিমধ্যে মোট প্রায় ২.৫ লাখ কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। 
Union's flag-hoisting (above)
 and procession (below)

সরকারী বাজেটে সামাজিক খাতে ব্যয় বরাদ্দ নিতান্তই অপ্রতুল। রিজার্ভ ব্যঙ্কের ২০১০-এর হিসেব অনুযায়ী শিক্ষখাতে জিডিপির ২.৯৮%, স্বাস্থ্যখাতে ১.২৭% ও অন্যান্য খাতে জিডিপির মাত্র ২.৩৮% ব্যয় করা হয়। সামাজিক খাতে ব্যয় আরও কমিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিপিএলের সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর চক্রান্ত করছে সরকার এবং সামাজিক ক্ষেত্রগুলিতে মুনাফালোভি ব্যক্তিমালিকদের অনুপ্রবেশের পথ সুগম করার নীতি অনুসরণ করছে সরকার।

     সরকারের এই নীতিতে সাধারণভাবে শ্রমজীবী মানুষ এবং বিশেষ করে বরাক উপত্যকার মত পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের জীবনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গণ-আন্দোলনের চাপে কাজের অধিকার সাব্যস্ত করতে এনরেগা সহ অন্যান্য যেসব জনহিতকর প্রকল্প সরকার নিয়েছে তাও দুর্নীতি ও প্রশাসনযন্ত্রের অসংবেদনশীলতা ও গাফিলতিতে সুস্টুভাবে কার্যকরী হচ্ছে না। এনরেগার বছরে ১০০ দিনের কাজ দেওয়া হচ্ছে না এবং কাজ দিতে না পারলে যে বেকার ভাতা দেওয়ার কথা, তা দিতেও রাজ্য সরকার টালবাহানা করছে। এব্যাপারে ইউনিয়নের এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট অতিসত্বর বেকার ভাতা প্রদান করার আদেশও জারি করেছে। চা-শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সহ প্ল্যাল্টেশন লেবার আইন অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধাগুলি দেওয়া হয় না, এমনকি বরাক উপত্যকার চা-শ্রমিকদের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার শ্রমিকদের চেয়েও নেক কম হাজিরা দেওয়া হয়।

            ইউনিয়ন সরকারের ব্যক্তিগতকরণের নীতির বিরুদ্ধে এবং নিম্নলিখিত দাবিগুলির ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে এবং নিউ ট্রেড ইউনিয়ন ইনিসিয়েটিভের উদ্যোগে সর্বভারতীয় আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে এই আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে বদ্ধপরিকর।
          (১)এনরেগার বকেয়া বেকার ভাতা প্রদান করতে হবে। (২) এনরেগার অধীনে বছরে ২০০দিনের কাজ দিতে হবে। (৩) ইণ্ডিয়ান লেবার কনফারেন্স ১৯৫৭ ও সুপ্রিম কোর্টের আদেশের গাইডলাইন মেনে চা-শ্রনিক ও অসংগঠিত শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ধার্য করতে হবে। (৪) বরাক ও ব্রহ্মপুত্র ভ্যালির চা-শ্রমিকদের সমহারে মজুরি প্রদান করতে হবে। (৫) সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। (৬) পঞ্চায়েত ও গ্রামসভাকে শক্তিশালী করতে হবে। (৭) বহুস্তরীয় স্বশাসনের ভিত্তিতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সব জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। (৮) সর্বস্তবরে দুর্নীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি রোধ এবং লোকপাল আইন চালু করতে হবে।              




স্বাভিমান:SWABHIMAN Headline Animator

^ Back to Top-উপরে ফিরে আসুন