আগামী ২ ফেব্রুয়ারী নিঊ ট্রেড ইউনিয়ন ইনিসিয়েটিভের সর্বভারতীয় দাবি দিবস উপলক্ষে অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের অহ্বানে ‘রাজপথে জনসভা’ থেকে উত্থাপিত দাবি সনদ

Posted by স্বাভিমান


ASOM MOJURI SRAMEEK UNION    
H.O. C/o N. k. Das, Khudiram Sarani, Sibbari Road, Tarapur, Silchar - 788008
Regd No. 2287
Ref :  NIL                                                                                             Date : 02-02-2012

প্রতি,
জেলা উপায়ুক্ত
কাছাড়/হাইলাকান্দি/করিমগঞ্জ

বিষয় স্মারকপত্র।

মহাশয়,
আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীরা অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটির পক্ষে এবং রাজপথে জনসভা থেকে নিম্নলিখিত দাবিগুলি অনতিবিলম্বে পূরণ করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আপনার কাছে তুলে ধরছি।
(১) (ক) বিভিন্ন জিপিতে এনরেগা শ্রমিকরা কাজ দাবি করা সত্বেও নির্ধারিত সময় অতিক্রম হওয়ার পরও কাজ দেওয়া হয়নি।
(খ) হাইলাকান্দি জেলার এনরেগা শ্রমিকদের বেকার ভাতা না দেওয়ায় ইউনিয়নের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় হাইকোর্ট বেকার ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ জারি করে, কিন্তু আজ পর্যন্ত তা কার্যকরী হয়নি। করিমগঞ্জ জেলাতেও বেকার ভাতার দাবি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। কাছাড় জেলাতেও বেকার ভাতার অনুরূপ দাবির ব্যাপারে প্রশাসন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি।
(গ) কাজ চাওয়া সত্বেও ১০০ দিনের কাজ দেওয়ার কোন গ্যারান্টি প্রদান করা হচ্ছে না কিংবা বেকার ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
(ঘ) প্রতিজন এনরেগা শ্রমিক যারা ন্যূনতম ১৫ দিন কাজ করেছে তাদেরকে জীবনবীমার অধীনে আনার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বিডিওর। কিন্তু বিডিওরা এদায়িত্ব পালন করছেন না।

এনরেগা সংক্রান্ত সমস্ত অনিয়ম দূর করার জন্য আমরা ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছি। অন্যথায় আদালত ও এনরেগা-ওম্বুডসম্যানের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হব এবং গণ-বিক্ষোভের যে কোন পরিণতির দায় প্রশাসনের উপর বর্তাবে।

 (২) (ক) চা-শ্রমিকদের যে রেশন প্রদান করা হয় তা অত্যন্ত নিম্ন মানের। মালিকপক্ষ গণ-বন্টন ব্যবস্থা থেকে রেশন সামগ্রী নিলেও সাধারণ রেশনের মান থেকে চা-বাগানের রেশনের মান নিম্ন মানের হওয়ার পেছনে দুর্নীতি থাকাই সম্ভব। এব্যাপারে প্রশাসনিক নজরদারির ব্যর্থতাই দায়ি।
      (খ) বাগিচা শ্রম আইন অনুসারে চা-শ্রমিকদের যে স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদান করার কথা তা  বেশিরভাগ       চা-বাগানেই লঙ্ঘিত হচ্ছে, অথচ এসব তদারকি করার জন্য ইন্সপেক্টর রয়েছে। সুতরাং এব্যাপারে প্রশাসনিক গাফিলতি রয়েছে। উপরন্তু বেশকিছু সংখ্যক চা-বাগান মালিক জাতিয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে বছরে ১৫ লক্ষ টাকা করে পান। কিন্তু এই অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় করা হয় না। জিলা স্বাস্থ্য মিশনের আধিকারিকরা এই অর্থের কার্যকরী রূপায়ণে ব্যর্থ হচ্ছেন।
      (গ) শ্রমিকদের অর্থ পিএফ তহবিলে জমা না দেওয়া সত্বেও এমন কোন নজির নেই যেখানে জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট মালিকদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিয়েছেন যাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চা-মালিকদের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ প্রশাসনের শিথিল মনোভাব শ্রমিকদের বঞ্চনাকে তীব্র করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
      (ঘ) বরাক-ব্রহ্মপুত্রের চা-শ্রমিকদের সমহারে মজুরি প্রদান করা হচ্ছে না, উভয় ক্ষেত্রেই ন্যূনতম মজুরি প্রয়োজনের তূলনায় অত্যন্ত নগন্য। পরিবর্তনশীল মহার্ঘ ভাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মজুরি অথবা এনরেগা মজুরির সমান মজুরি চা-শ্রমিকদের প্রদান করা হোক এবং নিরিখ সর্বোচ্চ ১৮ কেজিতে রাখা হোক।
      (ঙ) সবধরনের সরকারী-বেসরকারী সমীক্ষা দেখায় যে চা-শ্রমিকদের মধ্যে চূড়ান্ত অপুষ্টি বিরাজ করছে। অপুষ্টি মানেই দীর্ঘদিনের খাদ্যাভাব। এই দীর্ঘ খাদ্যাভাব থেকেই তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে তাদেরকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় ভূবনভ্যালি চা-বাগান বন্ধ হওয়ায় এবং রেশন সহ স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ১০ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এই অনাহারে মৃত্যুর জন্য দায়ি মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে অবিলম্বে প্রশাসনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা উচিত এবং সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন অনুযায়ী শ্রমিকদের জন্য প্রয়োজনীয় রেশন, চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করা উচিত।
       সব চা-শ্রমিক পরিবারদের বিপিএলের অন্তর্ভুক্ত করা ucituউচিত।
      এই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা উপায়ুক্তের অধীনে সব ইউনিয়ন, সামাজিক সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্তাদের
      নিয়ে একটি কমিটি গঠনের জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি যাতে এই সমস্ত ক্ষেত্রে অনিয়মগুলি স্বচ্ছ্বভাবে   
     খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়।                                                                                                                                      
(৩) (ক) বিভিন্ন ব্লকে, উদাহরণসরূপ হাইলাকান্দি জিলার দক্ষিণ হাইলাকান্দি, লালা, হাইলাকান্দি ও আলগাপুর ব্লকে এনরেগা, বিআরজিএফ, দ্বাদশ ফিনান্সের অর্থ, ইন্দিরা আবাস ইত্যাদি বিষয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করে ইউনিয়ন। কোন ব্লকে বিডিও তদন্ত করেন, কিন্তু দোষীদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেননি। কোন ব্লকে এব্যাপারে কোন তদন্তই করা হয়নি। আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় সবার বিশ্বাস জন্মাবে যে প্রশাসনিক যোগসাজসেই এই দুর্নীতি চলছে এবং ইউনিয়নও বাধ্য হবে প্রয়োজনীয় আইনী ও আন্দোলনের পদক্ষেপ নিতে।
(৪)  (ক) বরাক উপত্যকার অভ্যন্তরীণ ও বহিঃযোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। মুমূর্ষু রোগীদের জন্য এই রাস্তাগুলি মরণফাঁদ এবং সুস্থ মানুষদের রোগী বানানোর উত্তম ব্যবস্থা। অবিলম্বে এগুলির মেরামত করা প্রয়োজন। উপরন্তু বরাকের সাথে বাংলাদেশের ট্রেনজিট রুট চালু করা জরুরি। ভৈরবি থেকে বদরপুরের রেল যোগাযোগ অনিয়মিত ও অপ্রতূল। যাত্রী যোগাযোগের সুব্যবস্থার জন্য ভৈরবি-বদরপুর ও ভৈরবি-শিলচর নতূন রেল চালু করা জরুরি।
(৫) (ক) জামিরা জিপির বনাঞ্চালের মত সব বনাঞ্চলে বন-আইন অনুসারে কার্যকরী প্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে তোলা ও জনজাতীয় সহ ৭৫ বছরের অধিককাল থেকে বসবাসরত অ-জনজাতীয়দের জমির পাট্টা প্রদান করার ব্যবস্থা করা।
      (খ) কৃষি-ফসল সরকারিভাবে ক্রয় করা ও প্রকৃত ভূমিহীনদের ভূমি প্রদান করা।
(৬) (ক) দেশব্যাপী বিপিএল সার্ভে অসমের সব জিপিতে অনতিবিলম্বে শুরু করা এবং ত্রুটিহীনভাবে করার জন্য গ্রামসভাকে গুরুত্ব আরোপ করা। সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা।
     (খ) এনরেগা ও পঞ্চায়েতের অন্যান্য বিষয়ে গ্রামসভার যে বিধান রয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা।
     (গ) সর্বক্ষেত্রে ন্যূনতম মজুরি আইন প্রয়োগ করা। 
                                                                      আপনার বিশ্বস্ত
                                                অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন
                                    (নিউ ট্রেড ইউনিয়ন ইনিসিয়েটিভের অনুমোদনপ্রাপ্ত)
                                                বরাক উপত্যকা আঞ্চলিক কমিট
                                                                           এবং
                                       কাছাড়/ হাইলাকান্দি/ করিমগঞ্জ জেলা কমিটি

0 comments:

স্বাভিমান:SWABHIMAN Headline Animator

^ Back to Top-উপরে ফিরে আসুন