৯ জুন বীর বিরসা মুণ্ডা’র শহিদ দিবস পালনের আহ্বান
Posted by Labels: আসাম, য়াদিবাসি, শ্রমিক আন্দোলন, সমাজ
(ফোরাম
ফর সোশ্যাল হারমনি ও কোরাস – এর
পক্ষে প্রচারপত্র )
৯ জুন বীর বিরসা মুণ্ডা’র
শহিদ দিবস। স্বাধীনতা সংগ্রামী বিরসা মুণ্ডা সমগ্র ভারতবাসীর শহিদ। চা-শ্রমিক ঝাড়খণ্ডি-আদিবাসীদের
কাছে বীর বিরসা এখনও জীবন্ত ভগবান। কারণ এই স্বাধীন দেশে চা-শ্রমিক
ঝাড়খণ্ডি-আদিবাসীদের প্রতি হয়ে চলেছে অন্যায়, অত্যাচার।
বিচারের আশায় মানুষ ভগবানের কাছে যায়। চা-শ্রমিক
ঝাড়খণ্ডি-আদিবাসীদের প্রতি যে অন্যায়-অত্যাচার
তার বিচারের জন্য দরকার আপসহীন সংগ্রাম। তাই এই শ্রমিক জনগোষ্ঠী যায় বীর বিরসা
ভগবানের কাছে লড়াইয়ের শপথ নিতে। প্রতিবারের মত এবারও অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের
উদ্যোগে পালন করা হচ্ছে বীর বিরসা মুণ্ডার শহিদ দিবস, স্মরণ
করা হচ্ছে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে তাঁর আপসহীন লড়াইয়ের ও শহিদত্ব বরণের কাহিনি।
কেমন আছেন বীর বিরসা ভগবানের
দেশের লোকরা? ব্রিটিশ আমাদের নিয়ে আসে আসামের চা-বাগানে
সস্তা শ্রমিক হিসেবে। আমাদের আজা-পুরখাদের
উপর ব্রিটিশের অত্যাচারের কাহিনী শুনে আমরা রেগে যাই। কিন্তু স্বাধীন ভারতের
বর্তমান শাসকদের অন্যায়-অত্যাচারে
আমাদের মনে আগুণ জ্বলে। আমাদের ভাল খাদ্য – বস্ত্র
– বাসস্থান দিয়ে মানুষের মত বাঁচতে দিতে চায় না বাগান মালিক
ও তাদের পেটোয়া সরকার। খাদ্য সুরক্ষা আইন হলো, কিন্তু
আমাদের ঘরে সরকারের রেশন আসে না। বাগান মালিক যে রেশন দেয় তা তো আমাদের কাজের
মজুরি, কিন্তু তাতেও ভেজাল। সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যে মজুরি
পাই, তাতে আমাদের মা-বোন-বেটা-ছেলেদের
শুধু ছেঁড়া কাপড়ই জোটাতে পারি। ঘরে জল পড়লেও তা মেরামতি হয় না। আমরা কি বাগান
মালিকের হুকুমের গোলাম? কাজ করে যাব, মজুরি
পাব সামান্য। দেশের কোনো আইন এখানে চলে না। ন্যূনতম মজুরি আইন মত মজুরি ৩৫০ টাকা
দেওয়া হবে না। আমাদের জমির পাট্টা নেই। সরকার এসব কিছু দেখে না। আমরা কি এদেশের
নাগরিক নই?
আমরা কেন মেনে নিচ্ছি এ অন্যায় – অত্যাচার।
কারণ আমাদের মায়ের ভাষা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের তফসিলি জাতি-জনজাতির স্বীকৃতি কেড়ে নিয়ে আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।
আমাদের শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে রেখেছে, চাকরি-বাকরি থেকে বঞ্চিত করেছে, মানুষের
মর্যাদা দেয় নাই। ফলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা
হারিয়ে যাচ্ছে, আমরা ভুলে যাচ্ছি বিরসা ভগবানের রক্ত আমাদের শরীরে বইছে।
এ অবস্থা আর চলতে পারে না। আমাদের লড়তে হবে। লড়তে হবে
বিরসা মুণ্ডার
দেখানো পথে। লড়তে হলে সব পাইত-জাইত-ধর্মের শ্রমিক ও সব
নিপীড়িত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ
করতে হবে। এটাই বীরসা ভগবানের পথ। আসুন, আমরা
বীর শহিদ বীরসা মুণ্ডা’র নামে শপথ নেই ও
ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তুলি।
0 comments:
Post a Comment