শিলচরে ‘সাম্প্রদায়িক বিভাজনের ইতিহাস, ভাষিক অধিকার ও উনিশের ঐতিহ্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা ১১ জুন
Posted by Labels: আসাম, জাতীয়তাবাদ, সংখ্যালঘু, সমাজ
যথারীতি
অন্যান্য বহু সংগঠনের সাথে এবারের উনিশে মে ভাষা শহিদ দিবস পালন করেছে কোরাস ও ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি। কিন্তু উনিশে মে উদযাপন
একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের ঐতিহ্য পুনর্নির্মিত হতে
থাকে। এই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবে সংগঠনদ্বয় যৌথভাবে আগামী ৭ই জুন সন্ধ্যা ৬:৩০ টায় শিলচর
সঙ্গীত বিদ্যালয়ে উনিশের নাটকগুলি একসাথে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেছে এবং ১১ জুন ১০:৩০ টায় শিলচর মধ্যশহর সাংস্কৃতিক সংস্থার হলে ‘সাম্প্রদায়িক বিভাজনের ইতিহাস, ভাষিক অধিকার ও উনিশের
ঐতিহ্য’ শীর্ষক একটি আলোচনাচক্রের আয়োজন করেছে।
ইতিহাসের
মাইলফলক হিসেবে যে সব ঘটনা রয়েছে সে সবগুলির গর্ভে প্রগতিশীল ও প্রতিক্রিয়াশীল দু’টি ধারাই বিদ্যমান থাকে। ঐতিহাসিক
সংঘাতের এই ঘটনায় আম জনতার স্বার্থ জয়ী হলে প্রগতিশীল ধারা সমাজে প্রভাব বিস্তার
করে, আর শাসক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষিত হলে প্রতিক্রিয়াশীল
ধারা সমাজে প্রভাব বিস্তার করে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ’৬১-এর
উনিশে মে’র আগে পরে ঘটা দেশভাগ, আসু
আন্দোলন, আসামের ভয়াবহ দাঙ্গা এরকমই কিছু ঐতিহাসিক
ঘটনাগুলিতে প্রতিক্রিয়াশীল ধারাই বিজয় অর্জন করেছে ও জনমানসে এর স্মৃতি আজও বহমান।
সাম্প্রদায়িক, ভাষিক সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের এই বিজয়ের
ইতিহাসকে শাসক শ্রেণি প্রতিনিয়ত ব্যবহার করেছে ও বর্তমানে
আরও তীব্রভাবে ব্যবহার করে চলেছে তাদের শাসকীয় আধিপত্যকে বজায় রাখতে। ভাষিক – সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের গর্ভে পরাভূত প্রগতিশীল ধারাকে উন্মোচিত করা ও তাকে
পুনর্নির্মাণ করা আমাদের দায় ও দায়িত্ব। উনিশ আমাদের এই দায় ও দায়িত্ব অর্পণ করেছে,
কারণ ’৬১-এর উনিশ শাসকীয় সব চক্রান্তকে ছাপিয়ে
ভাষিক অধিকার প্রতিষ্ঠার গণতান্ত্রিক দাবিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।
বরাকের পরবর্তী মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে উনিশ।
(৪ জুন সাংবাদিক সম্মেলনের ছবি) |
কিন্তু সেই
উনিশকে কলুষিত করার প্রয়াস ও এর ঐতিহ্যকে আস্তাকুঁড়ে ঠেলে দিয়ে ভাষিক সাংস্কৃতিক
আগ্রাসনকে মেনে নেওয়ার শাসকীয় আয়োজন চলছে ঘটা করে। সুকৌশলে ইতিহাসের প্রগতিশীল
ধারাকে মুছে ফেলার বিশাল প্রয়াস চলছে অর্থ ও প্রতিপত্তির মদত নিয়ে। এই আয়োজন
হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির মোড়কে ভাষিক আধিপত্যের কাছে আমাদের আত্মসমর্পণ ও দাসত্বের
আহ্বান।
উনিশ দাবি
করে এই শাসকীয় আয়োজনকে চ্যালেঞ্জ জানানোর, উনিশ দাবি করে ইতিহাসের প্রগতিশীল ধারার পুনর্নির্মাণ।
ইতিহাস কতগুলি ঘটনারাজি ও তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নয়, ইতিহাস
সত্য উন্মোচনের এক বৈজ্ঞানিক নির্মাণ। এই প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে
আগামী ১১ জুন’এর আলোচনাচক্র একটি প্রাথমিক প্রয়াস। এই
আলোচনাচক্রে মূল আলোচক হিসেবে থাকবেন ‘বঙ্গভঙ্গ – দেশত্যাগ – দাঙ্গা’ বইয়ের লেখক কলকাতা থেকে আমন্ত্রিত বক্তা
সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস ও আমাদের এঅঞ্চলের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী তপোধীর ভট্টাচার্য।
0 comments:
Post a Comment